পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (প্রথম খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/২৩১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

SO S রবীন্দ্র-রচনাবলী এ তরুণ তনুখানি লহ চুরি করে— আঁখি হতে লাও ঘুম, ঘুমের স্বপন । জাগ্ৰত বিপুল বিশ্ব লও তুমি হরে অনন্তকালের মোর জীবন-মরণ । বিজন বিশ্বের মাঝে মিলনশ্বাশানে নির্বাপিত সূর্যালোক লুপ্ত চরাচর, লাজমুক্ত বাসমুক্ত দুটি নগ্ন প্ৰাণে তোমাতে আমাতে হই অসীম সুন্দর । এ কী দুরাশার স্বপ্ন হায় গো ঈশ্বর, তোমা ছাড়া এ মিলন আছে কোনখানে ! শ্রান্তি সুখশ্রমে আমি, সখী, শ্ৰান্ত অতিশয় ; পড়েছে শিথিল হয়ে শিরার বন্ধন । অসহ্য কোমল ঠেকে কুসুমাশয়ন, কুসুমরেণুর সাথে হয়ে যাই লয় । স্বপনের জালে যেন পড়েছি। জড়ায়ে । রবির ছবির মতো যেতেছি গড়ায়ে, সুদূরে মিলিয়া যায় নিখিলনিলয় । ডুবিতে ডুবিতে যেন সুখের সাগরে কোথাও না পাই ঠাই, শ্বাস রুদ্ধ হয়— এ যে সৌরভের বেড়া, পাষাণের নয়কেমনে ভাঙিতে হবে ভাবিয়া না পাই, অসীম নিদ্রার ভারে পড়ে আছি তাই । বন্দী দাও খুলে দাও, সখী, ওই বাহুপাশ— চুম্বনমন্দিরা আর করায়ো না পান । কুসুমের কারাগারে রুদ্ধ এ বাতাসছেড়ে দাও, ছেড়ে দাও বদ্ধ এ পরান । কোথায় উষার আলো, কোথায় আকাশএ চির পূর্ণিমারাত্রি হােক অবসান । আমারে ঢেকেছে তব মুক্ত কেশপাশ, তোমার মাঝারে আমি নাহি দেখি ত্ৰাণ ! আকুল অঙ্গুলিগুলি করি কোলাকুলি গাথিছে সর্বাঙ্গে মোর পরিশের ফাদ ।