পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (প্রথম খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/২৪৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কড়ি ও কোমল কোথায় তোমার, নাথ, বিশ্ব-ঘেরা হাসি । আমারে কড়িয়া লাও, করো গো গোপন— * আমারে তোমার মাঝে করো গো উদাসী । ক্ষুদ্র আমি করিতেছে বড়ো অহংকার, ভাঙো নাথ, ভাঙো নাথ, অভিমান তার | প্রার্থনা তুমি কাছে নাই ব’লে হেরো, সখা, তাই সকলেই উচু হয়ে দাড়ায়ে সমুখে বলিতেছে, “এ জগতে আর কিছু নাই ।” নাথ, তুমি একবার এসো হাসিমুখে এরা সবে স্নান হয়ে লুকাক লজ্জায়— সুখদুঃখ টুটে যাক তব মহাসুখে, যাক আলো-অন্ধকার তোমার প্রভায় | নহিলে ঘুচে না। আর মর্মের ক্ৰন্দন— শুষ্ক৷ ধূলি তুলি শুধু সুধাপিপাসায়, প্ৰেম ব’লে পরিয়াছি মরণবন্ধন । কীভূ পড়ি কীভূ উঠি, হাসি আর কঁাদি— খেলাঘর ভেঙে পড়ে রচিবে সমাধি । যারে চাই তার কাছে আমি দিই। ধরা, সে আমার না হইতে আমি হই তার | পেয়েছি বলিয়ে মিছে অভিমান করা, অন্যেরে বাধিতে গিয়ে বন্ধন আমার । নিরখিয়া দ্বারমুক্ত সাধের ভাণ্ডার দুই হাতে লুটে নিই রত্ন ভূরি ভূরি— নিয়ে যাব মনে করি, ভারে চলা ভার, চোরা দ্রব্য বোঝা হয়ে চোরে করে চুরি । চিরদিন ধরণীর কাছে ঋণ চাই, পথের সম্বল ব'লে জমাইয়া রাখি, আপনারে বাধা রাখি সেটা ভুলে যাই— পাথেয় লইয়া শেষে কারাগারে থাকি । বাসনার বোঝা নিয়ে ডোবে-ডোবে তরী— ফেলিতে সরে না মন, উপায় কী করি ! こ > (?