পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (প্রথম খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/২৮৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মানসী। কিছু নাহি করি দাওয়া, ছাতে বসে খাই হাওয়া, যতটুকু পড়ে-পাওয়া ততটুকু ভালো— যারা মোরে ভালোবাসে ঘুরে ফিরে কাছে আসে, হাসিখুশি আশেপাশে নয়নের আলো । বাহবা যে জন চায় বসে থাক চৌমাথায়, নাচুক তৃণের প্রায় পথিকের স্রোতে— নাই চাল নাই চুলি ধূলির পর্বতে । বেড়ে যায় দীর্ঘ ছন্দ, লেখনী না হয় বন্ধ, বক্তৃতার নামগন্ধ পেলে রক্ষে নেই। ফেনা ঢোকে নাকে চোখে, প্ৰবল মিলের ঝোকে ভেসে যাই একরোখে বুঝি দক্ষিণেই । বাহিরেতে চেয়ে দেখি দেবতাদুর্যোেগ এ কী ! বসে বসে লিখিতে কি আর সরে মন । আদ্র বায়ু বহে বেগে, গাছপালা ওঠে। জেগে— ঘনঘোর স্নিগ্ধ মেঘে আঁধার গগন । বেলা যায়, বৃষ্টি বাড়ে, বসি আলিসার আড়ে ভিজে কাক ডাক ছাড়ে মনের অসুখে । রাজপথ জনহীন, শুধু পান্থ দুই তিন ছাতার ভিতরে লীন ধায় গৃহমুখে । বৃষ্টি-ঘেরা চারি ধার, ঘনশ্যাম অন্ধকার, কুপ-কুপ শব্দ আর ঝরঝর পাতা । থেকে থেকে ক্ষণে ক্ষণে গুরু গুরু। গরজনে মেঘদূত পড়ে মনে আষাঢ়ের গাথা । একাকিনী রাধিকার চকিতচরণ— আর, দুটি ছলছল নলিননয়ন ! এ ভরা বাদর দিনে কে বাচিবে শা,াম বিনে, কাননের পথ চিনে মন যেতে চায় । বিরহ, বকুল, আর বৃন্দাবন স্তৃপাকার সেগুলো চাপাই কার স্কন্ধে তাই ভাবি । এখন ঘরের ছেলে বাতি ঘরে ফিরে গেলে দু-দণ্ড সময় পেলে নাবার খাবার । RG &