পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (প্রথম খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৩০৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ՀԳ Ե স্নান আলো শুয়ে আছে বালুকার তীরে । বায়ু উঠে ঢেউ তুলি, টলমল পড়ে দুলি কুলে বাধা নীেকাগুলি জাহ্নবীর নীরে । চিঠি কাঁই ! হেথা এসে একা বসে দূর দেশে কী পড়িব দিনশেষে সন্ধ্যার আলোকে ! গোধূলির ছায়াতলে কে বলে গো মায়াবলে সেই মুখ অশ্রুজালে একে দেবে চোখে ! গভীর গুঞ্জনস্বনে ঝিল্লিরব উঠে বনে, কে মিশাবে তারি সনে স্মৃতিকণ্ঠস্বর ! তীরতরু-ছায়ে-ছায়ে কোমল সন্ধ্যার বায়ে কে আনিয়া দিবে গায়ে সুকোমল কর । পাখি তরুশিরে আসে, দূর হতে নীড়ে আসে তরীগুলি তীরে আসে, ফিরে আসে সবে— কেন এ কোলের পর আসে না নীরবে ! দিনান্তে মেহের স্মৃতি একবার আসে নিতি কলরব-ভরা প্রীতি লয়ে তার মুখে— দিবসের ভার যত তবে হয় অপগত, নিশি নিমেষের মতো কাটে স্বপ্নসুখে । সকলই তো মনে আছে। যতদিন ছিল কাছে কত কথা বলিয়াছে কত ভালোবেসেকত কথা শুনি নাই, হৃদয়ে পায় নি ঠাই, মুহূর্ত শুনিয়া তাই ভুলেছি নিমেষে । পাতা পোরাবার ছলে আজ সে যা-কিছু বলে, তাই শুনে মন গলে, চোখে আসে জলতারি লাগি কত ব্যথা কত মনোব্যাকুলতা, দু-চারিটি তুচ্ছ কথা জীবনসম্বল ! দিবা যেন আলোহীনা এই দুটি কথা বিনা “তুমি ভালো আছ কি না” “আমি ভালো আছি । মোহ যেন নাম ডেকে কাছে এসে যায় দেখে, দুটি কথা দূর থেকে করে কাছাকাছি। মাঝে ব্যবধান কত নদীগিরিপারে স্মৃতি শুধু স্নেহ বয়ে দুহু করম্পর্শ লয়ে অক্ষরের মালা হয়ে বঁধে দুজনারে ।