পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (প্রথম খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৩০৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Rbro রবীন্দ্ৰ-রচনাবলী আশথ উঠিয়াছে প্রাচীর টুটি, সেখানে ছুটিতাম সকালে উঠি । করবী থোলো থোলো রয়েছে ফুটি । বেগুনি-ফুলে-ভরা লতিকা দুটি । আঁচল পদতলে পড়েছে লুটি । মাঠের পরে মাঠ, মাঠের শেষে সুদূর গ্রামখানি আকাশে মেশে। এ ধারে পুরাতন শ্যামল তালবন সঘন সারি দিয়ে দাড়ায় ঘেঁষে । বঁধের জলরেখা ঝলসে যায় দেখা, জটলা করে তীরে রাখাল এসে । চলেছে পথখানি কোথায় নাহি জানি, কে জানে কত শত নূতন দেশে । হায় রে রাজধানী পাষাণকায়া ! বিরাট মুঠিতলে চাপিছে দৃঢ়বলে ব্যাকুল বালিকারে, নাহিকো মায়া । কোথা সে খোলা মাঠ, উদার পথঘাট, পাখির গান কই, বনের ছায়া ! / কে যেন চারি দিকে দাড়িয়ে আছে, খুলিতে নারি মন শুনিবে পাছে ! হেথায় বৃথা কাদা, দেয়ালে পেয়ে বাধা কান্দন ফিরে আসে আপন-কাছে । আমার আঁখিজল কেহ না বোঝে, অবাক হয়ে সবে কারণ খোজে। “কিছুতে নাহি তোষ, এ তো বিষম দোষ গ্ৰাম্য বালিকার স্বভাব ও যে ! স্বজন প্ৰতিবেশী এত যে মেশামেশি, ও কেন কোণে বসে নয়ন বোজে ?” কেহ বা দেখে মুখ কেহ বা দেহকেহ বা ভালো বলে, বলে না কেহ । পরখ করে সবে, করে না স্নেহ ।