পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (প্রথম খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৩৭৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

V8 by সেই বিষাদের বিন্দু, বিদায়ের উপহার, প্রখর প্রমোদ হতে রাখিবে শীতল ক’রে তোমার তরুণ মুখ ; রজনীর অশ্রু-’পরে পড়ি প্ৰভাতের হাসি দিবে শোভা অনুপম বিকচ সৌন্দর্য তব করিবে সুন্দরতম । রেড সী। ৯ কার্তিক ১৮৯০ মৌন ভাষা থাক থাক, কাজ নাই, বলিয়ো না কোনো কথা । চেয়ে দেখি, চলে যাই, মনে মনে গান গাই, মনে মনে রচি বসে কত সুখ কত ব্যথা । বিরহী পাখির প্রায় অজানা কানন-ছায় উড়িয়া বেড়াক সদা হৃদয়ের কাতরতা— তারে বাধিয়ো না ধরে, বলিয়ো না কোনো কথা । আঁখি দিয়ে যাহা বলো সহসা আসিয়া কাছে সেই ভালো, থাক তাই, তার বেশি কাজ নাই— কথা দিয়ে বলে যদি মোহ ভেঙে যায় পাছে । এত মৃদু এত আধো অশ্রুজালে-বাধো-বাধো শরমে-সভয়ে-স্নান এমন কি ভাষা আছে ? কথায় বোলো না তাহা আঁখি যাহা বলিয়াছে । তুমি হয়তো বা পারো আপনারে বুঝাইতে— মনের সকল ভাষা প্ৰাণের সকল আশা পারো তুমি গেথে গেথে রচিতে মধুর গীতে । মনের সকল কথা পশিয়া আপন চিতেকী বুঝিতে কী বুঝেছি, কী বলিব কী বলিতে । তবে থাক। ওই শোনো, অন্ধকারে শোনা যায় জলের কল্লোলস্বর পল্লবের মরমরবাতাসের দীর্ঘশ্বাস শুনিয়া শিহরে কায় । আরো উর্ধের্ব দেখো চেয়ে অনন্ত আকাশ ছেয়ে কোটি কোটি মৌন দৃষ্টি তারকায় তারকায় । প্ৰাণপণ দীর্ঘ ভাষা জ্বলিয়া ফুটিতে চায় ।