পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (প্রথম খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৪০১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

\e) ۹S রবীন্দ্র-রচনাবলী সপ্তম । মিছে দেরি কর কেন ? ও কি আর কবুল করবে ? চলে ওকে পুড়িয়ে নিয়ে আসি গে। বিন্দে । দোহাই বাবা, আমি মারি নি । তোদের পায়ে পড়ি বাবা, আমি মারি নি । প্রথম । আচ্ছা, আগে প্রমাণ করা তুই মরিস নি। বিন্দে । হা, আমি প্রমাণ করে দেব, আমার স্ত্রীর হাতে শাখা আছে দেখবে চলো । দ্বিতীয় । না, তা না, ওকে মার, দেখি ওর লাগে কি না । তৃতীয় । (মারিয়া) লাগছে ? বিন্দে । উঃ ! চতুর্থ । এটা কেমন লাগল ? বিন্দে । ও বাবা ! পঞ্চম । এটা কেমন ? বিন্দে । তুমি আমার ধর্মবাপ । [সহসা ছুটিয়া পলায়ন ও হাসিতে হাসিতে সকলের অনুগমন সন্ন্যাসী । আহা, শ্রান্তদেহে বালা ঘুমিয়ে পড়েছে ! ভুলে গেছে সংসারের অনাদর-জ্বালা । কঠিন মাটিতে শুয়ে শিরে হাত দিয়ে যেন এই বালিকার ছোটাে হাত দুটি হৃদয়েরে অতি ধীরে করিছে বেষ্টন । পালা, পালা, এইবেলা, পালা এইবেলা । ঘুমিয়েছে, এইবেল ওঠ রে সন্ন্যাসী ! পলায়ন ! পলায়ন ! ছিছি পলায়ন ! বালিকা দেখিয়া শেষে পলাইতে হবে । কখনো না, পালাব না, রহিব এমনি । প্রকৃতি, এই কি তোর মায়াফাদ যত ! এ উর্ণাজালে তো শুধু পতঙ্গেরা পড়ে । চমকিয়া জাগিয়া বালিকা | প্ৰভু, চলে গেছ তুমি ! গেছ কি ফেলিয়া ! সন্ন্যাসী || • কেন যাব ! কারি ভয়ে পলাইব আমি ! ছায়ার মতন তোরে রাখিব কাছোতে, তবুও রহিব আমি দূর হতে দূরে । বালিকা ৷ ওই শোনো, রাজপথে মহা কোলাহল । সন্ন্যাসী । কোলাহল-মাঝে আমি রচিব নির্জন, নগরে পথের মাঝে তপোবন মোর, পাতিব প্রলয়াসন সৃষ্টির হৃদয়ে । একদল পুরুষ ও স্ত্রীলোকের প্রবেশ প্রথম স্ত্রী । (কোনো পুরুষের প্রতি) যাও, যাও, আর মুখের ভালোবাসা দেখাতে হবে না ! প্রথম পুরুষ। কেন, কী অপরাধ করলুম ?