পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (প্রথম খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৪১৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সন্ন্যাসী । প্রকৃতির প্রতিশোধ বজদন্ত কড়মড়ি ছুটিতেছে ঝড়, ক্ষুব্ধ সমুদ্রের মতো আঁধার অরণ্য তরুর তরঙ্গ লয়ে উঠিছে পড়িছে ! তবুও ঝটিকা, তোর বীজগীত গেয়ে ক্ষুদ্র এক বালিকার ক্ষীণ কণ্ঠধ্বনি Iারিলি নে ডুবাইতে ! এখনো শুনি যে ! ওই-যে সে কাদিতেছে করুণ স্বরেতে, নিশীথের বুক ফেটে উঠিছে সে ধ্বনি । কোথা যাব, কোথা যাব, কোন অন্ধকারে— জগতের কোন প্রান্তে, নিশীথের বুকে— ধরণীর কোন ঘোর, ঘোর গর্ভতলে— এ ধবনি কোথায় গেলে পশিবে না। কানো ! যাই ছুটে আরো, আরো অরণ্যের মাঝে— দিগবিদিক হারাইয়া মগ্ন হয়ে যাই । চতুৰ্দশ দৃশ্য s\tive অরণ্য হইতে ছুটিয়া বাহিরে আসিয়া যাক, রসাতলে যাক সন্ন্যাসীর ব্ৰত ! দূর করো, ভেঙে ফেলো দণ্ড কমণ্ডলু ! আজ হতে আমি আর নহি রে সন্ন্যাসী ! পাষাণসংকল্পভার দিয়ে বিসর্জন আনন্দে নিশ্বাস ফেলে বাচি একবার । হে বিশ্ব, হে মহাতরী, চলেছ কোথায়, আমারে তুলিয়া লও তোমার আশ্রয়ে— একা আমি সীতারিয়া পারিব না যেতে । কোটি কোটি যাত্রী ওই যেতেছে চলিয়া, আমিও চলিতে চাই উহাদেরি সাথে । যে পথে তপন শশী আলো ধ’রে আছে সে পথ করিয়া তুচ্ছ, সে আলো ত্যজিয়া, আপনারি ক্ষুদ্র ওই খদ্যোত-আলোকে কেন অন্ধকারে মারি পথ খুঁজে খুঁজে !! জগৎ, তোমারে ছেড়ে পারি। নে যে যেতে, মহা আকর্ষণে সবে বাধা আছি মোরা । VbrS