পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (প্রথম খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৪৫৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সখীগণ । কত কাতর হৃদয় ঘুরে ঘুরে হেরো কারে যাচে । অশোক । কী মধু, কী সুধা, কী সৌরভ, কী রূপ রেখেছ লুকায়ে ! সখীগণ । কোন প্ৰভাতে কোন রবির আলোকে দিবে খুলিয়ে কাহার কাছে । অশোক । সে যদি না আসে এ জীবনে, এ কাননে পথ না পায় ! সখীগণ । যারা এসেছে তারা বসন্ত ফুরালে নিরাশ প্ৰাণে ফেরে পাছে । প্ৰমাদ ! এ তো খেলা নয়, খেলা নয়—— এ যে হৃদয়দহনজালা সখী ! এ যে প্রাণভরা ব্যাকুলতা, গোপন মনের ব্যথা, এ যে কাহার চরণোদেশে জীবন মরণ ঢালা । কে যেন সতত মোরে যাই যাই করে প্রাণ, যেতে পারি। নে । যে কথা বলিতে চাহি । তা বুঝি বলিতে নাহি— কোথায় নামায়ে রাখি, সখী, এ প্রেমের ডালা ! যতনে গাথিয়ে শেষে পর্যাতে পারি। নে মালা । প্ৰথমা সখী । সে জন কে, সখী, বোঝা গেছে আমাদের সখী যারে মনপ্ৰাণ সঁপেছে । দ্বিতীয়া ও তৃতীয়া। ও সে কে, কে, কে ! প্ৰথম । ওই-যে তরুতলে, বিনোদমালা গলে, না জানি কোন ছলে বসে রয়েছে। দ্বিতীয়া । সখী, কী হবে— ও কি কাছে আসিবে কভু, কথা কবে ? তৃতীয়া । ও কি প্ৰেম জানে, ও কি বাধন মানে ? ও কী মায়াগুণে মন লয়েছে ! দ্বিতীয়া । বিভাল আঁখি তুলে আঁখি-পানে চায়, যেন পথ ভুলে এল কোথায় ওগো ! তৃতীয়া । যেন কী গানের স্বরে, শ্রবণ আছে ভরে, যেন কোন চাদের আলোয় মগ্ন হয়েছে। অমর | ওই মধুর মুখ জাগে মনে । ভুলিব না। এ জীবনে কী স্বপনে কী জাগরণে । তুমি জান বা না জান, মনে সদা যেন মধুর বঁাশরি বাজে হৃদয়ে সদা আছ বলে ।