পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (প্রথম খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৫১৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8brやり রবীন্দ্র-রচনাবলী পঞ্চম দৃশ্য ত্রিচুড় ক্রীড়াকানন ইলার সখীগণ প্ৰথম সখী । আলো কোথায় কোথায় দেবে ভাই ? দ্বিতীয় সখী । আলোর জন্যে ভাবি নে । আলো তো কেবল এক রাত্রি জুলবে । কিন্তু বাশি এখনো এল না কেন ? বঁাশি না বাজলে আমোদ নেই ভাই ! তৃতীয় সখী । বাঁশি কাশ্মীর থেকে আনতে গেছে, এতক্ষণে এল বোধ হয়। কখন বাজবে ভাই ? প্রথম সখী । বাজবে লো বাজবে । তোর অদৃষ্টেও একদিন বাজবোঁ । তৃতীয় সখী । পোড়াকপাল আর-কি ! আমি সেইজন্যেই ভেবে মরছি। প্ৰথম সখীর গান বাজিবে, সখী, বঁশি বাজিবেহৃদয়রাজ হদে রাজিবে । বচন রাশি রাশি, কোথা যে যাবে ভাসি অধরে লাজহাসি সাজিবে । সুখবেদনা মনে বাজিবে । মরমে মুরছিয়া মিলাতে চাবে হিয়া সেই চরণযুগরাজীবে । দ্বিতীয় সখী । তোর গান রেখে দে । এক-একবার মন কেমন হু হু করে উঠছে। মনে পড়ছে কেবল একটি রাত আলো হাসি বঁাশি আর গান । তার পরদিন থেকে সমস্ত অন্ধকার । প্রথম সখী । কঁাদবার সময় ঢের আছে বােন ! এ দুটাে দিন একটু হেসে আমােদ করে নে। ফুল যদি না শুকোত তা হলে আমি আজ থেকেই মালা গাঁথতে বসতুম | দ্বিতীয় সখী । আমি বাসরঘর সাজাব । প্ৰথম সখী । আমি সখীকে সাজিয়ে দেব । তৃতীয় সখী । আর আমি কী করব ? প্রথম সখী । ওলো, তুই আপনি সাজিস । দেখিস যদি যুবরাজের মন ভোলাতে পারিস । তৃতীয় সখী । তুই তো ভাই, চেষ্টা করতে ছাড়িস নি। তা, তুই যখন পারলি নে তখন কি আর আমি পারব ? ওলো, আমাদের সখীকে যে একবার দেখেছে তার মন কি আর অমনি পথে-ঘাটে চুরি যায় ? ঐ বাশি এসেছে। ঐ শোনা বেজে উঠেছে। প্ৰথম সখীর গান ওই বুঝি বাশি বাজেবনমাঝে কি মনোমাঝে ? বসন্তবায় বহিছে কোথায়, কোথায় ফুটেছে ফুল ! বলো গো সজনী, এ সুখরজনী কোনখানে উদিয়াছে—