Gł68 রবীন্দ্ৰ-রচনাবলী অঙ্কুর । আমাদের নিতাই সেদিন তাদের খুব কড়া কড়া দুটাে কথা শুনিয়ে দিয়েছিল। ঐ যার সেই ছুচোপরা মুখ সেই বেটা তেড়ে উত্তর দিতে এসেছিল ; আমাদের নিতাই বললে, ‘ওরে, তোর দক্ষিণদেশে থাকিস, তোরা উত্তরের কী জানিস ? উত্তর দিতে এসেছিস, উত্তরের জানিস কী ? শুনে আমরা হেসে কে কার গায়ে পড়ি । গণেশ । ইদিকে ঐ ভালোমানুষটি, কিন্তু নিতাইয়ের সঙ্গে কথায় আঁটবার জো নেই। হারু । নিতাই আমার পিসে হয় । কানু। শোনাে একবার কথা শোনাে। নিতাই আবার তোর পিসে হল কবে ? হারু । তোমরা আমার সকল কথাই ধরতে আরম্ভ করেছি! আচ্ছা, পিসে নয় তো পিসে নয়। তাতে তোমার সুখটা কী হল ? আমার হল না বলে কি তোমারই পিসে হল ? রঘুপতি । শুনলুম সৈন্য আসছে। ।। জয়সিংহ, অস্ত্র নিয়ে তুমি এইখানে দাড়াও । তােরা আয়, তােরা । রঘুপতি ও জয়সিংহের প্রবেশ এইখানে দাড়া ! মন্দিরের দ্বারা আগলাতে হবে । আমি তোদের অস্ত্ৰ এনে দিচ্ছি। গণেশ। অস্ত্র কেন ঠাকুর ? রঘুপতি । মায়ের পুজো বন্ধ করবার জন্যে রাজার সৈন্য আসছে। হারু । সৈন্য আসছে ! প্ৰভু, তবে আমরা প্ৰণাম হই । কানু। আমরা ক'জনা, সৈন্য এলে কী করতে পারব ? হারু | করতে সবই পারি- কিন্তু সৈন্য এলে এখেনে জায়গা হবে কোথায় ! লড়াই তো পরের কথা, এখানে দাড়াবা কোনখানে ! অক্রুর । তোর কথা রেখে দে। দেখছিস নে প্ৰভু রাগে কাপছেন ?— তা ঠাকুর, অনুমতি করেন তো আমাদের দলবল সমস্ত ডেকে নিয়ে আসি । হারু । সেই ভালো । আমনি আমার মামাতো ভাইকে ডেকে আনি । কিন্তু, আর একটুও বিলম্ব করা উচিত নয় । সরোষে রঘুপতি । দাড়া তোরা ! করজোডে জয়সিংহ। যেতে দাও প্ৰভু— প্রাণভয়ে ভীত এরা বুদ্ধিহীন, আগে হতে রয়েছে মরিয়া । আমি আছি মায়ের সৈনিক । এক দেহে সহস্ৰ সৈন্যের বল। অস্ত্র থাক পড়ে। ভীরুদের যেতে দাও । স্বাগত । রঘুপতি । সে কাল গিয়েছে । অস্ত্ৰ চাই, অস্ত্ৰ চাই- শুধু ভক্তি নয় । প্ৰকাশ্যে জয়সিংহ, তবে বলি আনো, করি পূজা । বাহিরে বাদ্যোদ্যম জয়সিংহ। সৈন্য নহে প্ৰভু, আসিছে রানীর পূজা। [সকলের প্রস্থানোদ্যম
s
