পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (প্রথম খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৫৮৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বিসর্জন (?(ł6ł রানীর অনুচর ও পুরবাসীগণের প্রবেশ সকলে । ওরে ভয় নেই-সৈন্য কোথায় ! মা'র পূজা আসছে। হারু । আমরা আছি। খবর পেয়েছে, সৈন্যেরা শীঘ্ৰ এ দিকে আসছে না । কানু। ঠাকুর, রানীমা পুজো পাঠিয়েছেন । রঘুপতি। জয়সিংহ, শীঘ্ৰ পূজার আয়োজন করো। [জয়সিংহের প্রস্থান পুরবাসীগণের নৃত্যগীত । গোবিন্দমাণিক্যের প্রবেশ গোবিন্দমাণিক্য । চলে যাও হেথা হতে- নিয়ে যাও বলি । রঘুপতি, শোনো নাই আদেশ আমার ? রঘুপতি । শুনি নাই । গোবিন্দমাণিক্য । তবে তুমি এ রাজ্যের নহ। রঘুপতি । নহি আমি । আমি আছি যেথা, সেথা এলে রাজদণ্ড খসে যায় রাজহস্ত হতে, মুকুট ধুলায় পড়ে লুটে । কে আছিস, আন মা'র পূজা । গোবিন্দমাণিক্য । চুপ কর । অনুচরের প্রতি কোথা আছে সেনাপতি, ডেকে আন ! হায় রঘুপতি, অবশেষে সৈন্য দিয়ে ঘিরিতে হইল। ধর্ম! লাজা হয় ডাকিতে সৈনিকদল, বাহুবল দুর্বলতা করায় স্মরণ । রঘুপতি । অবিশ্বাসী, সত্যই কি হয়েছে ধারণা কলিযুগে ব্ৰহ্মতেজ গেছে—তাই এত দুঃসাহস ? যায় নাই। যে দীপ্ত অনল জ্বলিছে। অন্তরে, সে তোমার সিংহাসনে নিশ্চয় লাগিবে ! নতুবা এ মনানলে ছাই করে পুড়াইব সব শাস্ত্র, সব , ব্ৰহ্মগর্ব, সমস্ত তেত্ৰিশ কোটি মিথ্যা । আজ নহে মহারাজ, রাজ-অধিরাজ, এই দিন মনে কোরো আর-এক দিন । নয়নরায় ও চাদপালের প্রবেশ নয়নের প্রতি গোবিন্দমাণিক্য । সৈন্য লয়ে থাকো হেথা নিষেধ করিতে জীবাবলি ।