পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (প্রথম খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

नि6ान् ববীন্দ্রনাথের সমগ্র বাংলা রচনার একটি নূতন সংস্করণ খণ্ডে খণ্ডে প্রকাশের আয়োজন হইল । প্ৰতোক খণ্ডে চারিটি ভাগ থাকিবে- ১. কবিতা ও গান ২ নাটক ও প্রহসন ৩ উপন্যাস ও গল্প ৪. প্ৰবন্ধ । রচনাগুলি যথাসম্ভব গ্রন্থপ্রকাশের কালানুক্রম অনুসাবে মুদ্রিত হইবে । এইখানে একটি কথার উল্লেখ প্রয়োজন । বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত কবির অনেক রচনা কোনো পুস্তকে সন্নিবিষ্ট হয় নাই । সেই-সকল রচনা সংগৃহীত হইতেছে, সর্বশেষ খণ্ডে সেগুলি সন্নিবিষ্ট হইবে । প্রকাশকাল অনুসারে সেগুলি যথাস্থানে যোজনা করা এখন আর সম্ভব হইল না । আর-একটি কথা কবি তাহার ভূমিকায় উল্লেখ কবিয়াছেন । তিনি তাহার প্রথম-বয়সের অনেক রচনা অত্যন্ত অপরিণত বলিয়া বর্জন করিতে ইচ্ছা করেন, এই রচনাবলীতে সেগুলিকে স্থান দিতে চাহেন না । এই প্রসঙ্গে তিনি আমাদিগকে জানাইয়াছেন— “ভূরিপরিমাণ যে-সকল লেখাকে আমি ত্যাজ্য বলে গণ্য করি আপনাদের সম্মিলিত নির্বন্ধে সেগুলিকেও স্বীকার করে নিতে হবে । আমার লজা চিরন্তন হয়ে যাবে এবং তাতে আমার নাম-স্বাক্ষর থাকবে । অর্থাৎ ভাবী কালের সামনে যখন দাড়াব তখন গাধার টুপিটা খুলতে পারব না ! আপনারা তর্ক করে থাকেন, ইতিহাসের আবর্জনা দিয়ে যে গাধার টুপিটা বানানো হয়, ইতিহাসের খাতিরে সেটা মহাকালের আসরে পরে আসতেই হবে । কবির তাতে মাথা ঠোঁট হয়ে যায় । ইতিহাসও বহু অবাস্তবকে বর্জন করতে করতে তবে সত্য ইতিহাস হয় । মানুষের অতিবৃদ্ধিপ্ৰপিতামহের দেহে যে একটা লম্বমান প্ৰত্যঙ্গ ছিল সেটাকে সর্বদা পশ্চাতে যোজনা করে বেড়ালে মানুষের ইতিহাস উজ্জ্বল হয় না, এ কথা মানব সন্তান মাত্রেই স্বীকার করে থাকে ৷” ভূমিকাতেও তিনি এইরূপ যুক্তি দিয়াছেন । তবে শেষ অবধি একটা আপস-নিম্পত্তি হইয়াছে, যে-সব রচনা তিনি বর্জনীয় বলিয়া মনে করেন তাহার অধিকাংশই পরিশিষ্ট খণ্ডে স্থান পাইবে । বিভিন্ন সংস্করণে অনেক গ্রন্থের স্থানে স্থানে কবি অল্পবিস্তর পরিবর্তন করিয়াছেন । বর্তমানে যে পাঠ তাহার অনুমোদিত, এই রচনাবলীতে সেই পাঠই অনুসৃত হইল । আশ্বিন ১৩৪৬ শ্ৰীচারুচন্দ্ৰ ভট্টাচাৰ্য্য