পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (প্রথম খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৮৩১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

broo রবীন্দ্র-রচনাবলী করলেম । মানুষের “divine” মুখশ্ৰী কতদূর পশুত্বের দিকে নাবিতে পারে, তা সেই নীেকোর মাবিটার মুখ দেখলে জানতে পারতে। তার চােখ দুটাে যেন বাঘের মতো, কালো কুচকুচে রঙ, কপাল নিচু, ঠোট পুরু, সবসুদ্ধ মুখের ভাব অতি ভয়ানক। অন্যান্য নীেকের সঙ্গে দরে বনল না, সে একটু কম দামে নিয়ে যেতে রাজি হল । ব— মহাশয় তো সে নীেকোয় বড়ো সহজে যেতে রাজি নন, তিনি বললেন আরবদের বিশ্বাস করতে নেই- ওরা অনায়াসে গলায় ছুরি দিতে পারে । তিনি সুয়েজের দুই-একটা ভয়ানক ভয়ানক অরাজকতার গল্প করলেন। কিন্তু যা হােক, আমরা সেই নীেকোয় তো উঠলেম । মাঝিরা ভাঙা ভাঙা ইংরেজি কয়, ও অল্পস্বল্প ইংরেজি বুঝতে পারে । আমরা তো কতক দূর নির্বিবাদে গেলেম। আমাদের ইংরেজ যাত্রীটির সুয়েজের পোস্ট আপিসেনাববার দরকার ছিল। পোস্ট আপিস অনেক দূর এবং যেতে অনেক বিলম্ব হবে, তাই মাঝি একটু আপত্তি করলে ; কিন্তু শীঘ্রই সে আপত্তি ভঞ্জন হল। তার পরে আবার কিছু দূরে গিয়ে সে জিজ্ঞাসা করলে, “পোস্ট আপিসে যেতে হবে কি ? সে দুই-এক ঘণ্টার মধ্যে যাওয়া অসম্ভব।”—আমাদের রুক্ষস্বভাব সাহেবটি মহা ক্ষাপ 2G d55G 53Cr, “Your grandmother "aa (of WiNiCMS Nfrt Secre)Gr, “What? mother? mother? what mother, don't say mother I” ONTNAT NGAN KPN TIGRKIGIGF ধরে বুঝি জলে ফেলে দিলে, আবার জিজ্ঞাসা করলে, “What did say? (কী বললি ?)” সাহেব তার রোখি ছাড়লেন না। আবার বললেন, “Your grandmother ” এই তো আর রক্ষা নেই, মাঝিাঁটা মহা তেড়ে উঠল । সাহেব গতিক ভালো নয় দেখে নরম হয়ে বললেন, “You don't seem to understand what I say!" Ofte fòsR VSRR grandmother KGTS GRY Ffô a VfR SATIS করতে ব্যস্ত। তখন সে মাঝিটা ইংরেজি ভাষা ছেড়ে ধমক দিয়ে চেচিয়ে উঠল “বস- চুপ।” সাহেব থতমত খেয়ে চুপ করে গেলেন, আর তার বাক্যস্মৃর্তি হল না। আবার খানিক দূর গিয়ে সাহেব জিজ্ঞাসা করলেন, “কতদূর বাকি আছে ?” মাঝি অগ্নিশৰ্মা হয়ে চেচিয়ে উঠল, “Two shilling give, ask what distance!" Wrest এইরকম বুঝে গেলেম যে, দু-শিলং ভাড়া ळ्नि সুয়েজ-রাজ্যে এইরকম প্রশ্ন জিজ্ঞাসা আইনে নেই! মাঝিটা যখন আমাদের এইরকম ধমক দিচ্ছে তখন অন্য অন্য দাড়িদের ভারি আমোদ বোধ হচ্ছে, তারা তো পরস্পর মুখচাওয়াচাওয়ি করে মুচকি মুচকি হাসি আরম্ভ করলে। মাঝিমহাশয়ের বিষম বদমেজাজ দেখে তাদের হাসি সামলানো দায় হয়ে উঠেছিল। এক দিকে মাঝি ধমকাচ্ছে, এক দিকে দাড়িগুলো হাসি জুড়ে দিয়েছে, মাঝিটির উপর প্রতিহিংসা তোলবার আর কোনো উপায় না দেখে আমরাও তিন জনে মিলে হাসি জুড়ে দিলেমএরকম সুবুদ্ধি অনেক স্থলে দায়ে পড়ে খাটাতে হয়। মানে মানে সুয়েজ শহরে গিয়ে তো পৌঁছলেম। সুয়েজ শহর সম্বন্ধে আমার কিছু বলবার অধিকার নেই, কারণ আমি সুয়েজের আধ মাইল জায়গার বেশি আর দেখি নি । শহরের চার দিকে একবার প্রদক্ষিণ করবার বাসনা ছিল, কিন্তু আমার সহযাত্রীদের মধ্যে র্যারা পূর্বে সুয়েজ দেখেছিলেন, তারা বললেন, “এ পরিশ্রমে শ্রান্তি ও বিরক্তি ছাড়া অন্য কোনো ফললাভের সম্ভাবনা নেই ।” তাতেও আমি নিরুৎসাহ হই নি। কিন্তু শুনলেম গাধায় চড়ে বেড়ানো ছাড়া শহরে বেড়াবার আর কোনো উপায় নেই। শুনে শহরে বেড়াবার দিকে টান আমার অনেকটা কমে গেল, তার পরে শোনা গেল, এ দেশের গাধাদের সঙ্গে চালকদের সকল সময়ে মতের ঐক্য হয় না, তারও একটি স্বতন্ত্র স্বাধীন ইচ্ছে আছে ; এইজন্যে সময়ে সময়ে দুই ইচ্ছের বিরোধ উপস্থিত হয়, কিন্তু প্ৰায় দেখা যায়, গাধার ইচ্ছে পরিণামে জয়ী হয়। সুয়েজে একপ্রকার জঘন্য চোখের ব্যামোর অত্যন্ত প্ৰাদুৰ্ভাব- রাস্তায় অমন শত শত লোকের চোখ ঐরকম রোগগ্ৰস্ত দেখতে পাবে। এখানকার মাছিরা ঐ রোগ চার দিকে বিতরণ করে বেড়ায় । রোগগ্ৰস্ত চোখ থেকে ঐ রোগের বীজ আহরণ করে তারা অরুগণ চােখে গিয়ে বসে, চার দিকে রোগ ছড়িয়ে পড়ে। সুয়েজে আমরা রেলগাড়িতে উঠলেম । এ রেলগাড়ির অনেকপ্রকার রোগ আছে, প্রথমত শোবার কোনো বন্দোবস্ত নেই, কেননা বসবার জায়গাগুলি অংশে অংশে বিভক্ত, দ্বিতীয়ত এমন গজগামিনী রেলগাড়ি সর্বত্র দেখতে পাওয়া যায় না । সমস্ত রাত্রিই গাড়ি চলেছে, দিনের বেলা যখন জেগে উঠলেম তখন দেখলেম