পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (প্রথম খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৯৯৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রবীন্দ্র-রচনাবলী ܓܟܠܬ অংশ পুনঃসংকলিত হয়। রচনাবলী-সংস্করণ প্রথম ও দ্বিতীয় সংস্করণের সহায়তায় নূতন প্রস্তুত হইল ; ইহাতে উক্ত বর্জিত পরিচ্ছেদগুলি সংগৃহীত, অন্যান্য বর্জিত অংশ প্রয়োজনমতে সংকলিত এবং প্রথম দ্বিতীয় ও আধুনিক সংস্করণের সহায়তায় বিভিন্ন স্থলে পাঠ সংশোধিত হইয়াছে। উত্তরকালে “রাজর্ষিার গল্পাংশ লইয়াই “বিসর্জন নাটক (প্ৰকাশ ১২৯৭) রচিত হয় । য়ুরোপ-প্রবাসীর পত্ৰ “য়ুরোপ-প্রবাসীর পত্র ১২৮৮ সালে গ্রন্থাকারে প্রকাশিত ৷ প্ৰথম সংস্করণে গ্রন্থকারের ভূমিকায় লিখিত আছে— “বন্ধুদের দ্বারা অনুরুদ্ধ হইয়া এই পত্রগুলি প্রকাশ করিলাম। প্রকাশ করিতে আপত্তি ছিল— কারণ কয়েকটি ছাড়া বাকি পত্রগুলি ভারতীর উদ্দেশে লিখিত হয় নাই, সুতরাং সে সমুদয়ে যথেষ্ট সাবধানের সহিত মত প্ৰকাশ করা যায় নাই ; বিদেশীয় সমাজ প্রথম দেখিয়াই যাহা মনে হইয়াছে তাহাই ব্যক্ত করা গিয়াছে। কিন্তু ইহাতে, আর কোনো উপকার হউক বা না হউক, একজন বাঙালি ইংলণ্ডে গেলে কিরূপে তাহার মত গঠিত ও পরিবর্তিত হয় তাহার একটা ইতিহাস পাওয়া যায় । “আমার মতে যে ভাষায় চিঠি লেখা উচিত সেই ভাষাতেই লেখা হইয়াছে। আত্মীয়স্বজনদের সহিত মুখামুখি একপ্রকার ভাষায় কথা কহা ও র্তাহারা চােখের আড়াল হইবামাত্র আর-একপ্রকার ভাষায় কথা কহা কেমন অসংগত বলিয়া বোধ হয় । “পূজনীয় ভারতীর সম্পাদক মহাশয় আমার পত্রের উত্তরে তাহার যে-সকল অভিপ্ৰায় প্রকাশ করিয়াছিলেন তাহাও পুস্তকে নিবিষ্ট হইল। সকল বিষয়েরই দুই পক্ষ আছে। উভয় পক্ষই পাঠকদের দেখা আবশ্যক ।” 4. এই গ্রন্থের প্রকাশে পরে কবির অনিচ্ছা ছিল, এইজন্য বহুকাল ইহা গ্রন্থাকারে প্রচারিত হয় নাই। বহুকাল পরে ‘পাশ্চাত্য ভ্ৰমণ” (আশ্বিন ১৩৪৩) গ্রন্থে পরিবর্তিত রূপে ইহা “য়ুরোপ-যাত্রীর ডায়ারি’র দ্বিতীয় খণ্ডের সহিত প্ৰকাশিত হয় । বর্তমান রচনাবলীতে পাশ্চাত্য ভ্রমণের পাঠ অনুসৃত । যুরোপ-প্রবাসীর পত্র পুনঃপ্রকাশে কবির অনভিরুচির ও পরে সম্মতির কারণ তিনি পাশ্চাত্য ভ্রমণের ভূমিকায় বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করিয়াছেন এবং প্রথম সংস্করণের ভূমিকার প্রথম কয় ছত্ৰেও সে সম্বন্ধে ইঙ্গিত আছে। পাশ্চাত্য ভ্রমণের ভূমিকাটি বর্তমান রচনাবলীতে সংকলিত । য়ুরোপ-প্রবাসীর পত্রগুলি যখন ভারতীতে প্রকাশিত হয় তখন ভারতী-সম্পাদক দ্বিজেন্দ্রনাথ ঠাকুর ঐ পত্রগুলির কোনো কোনোটিতে প্রকাশিত মন্তব্যের বিশেষ সমালোচনা করেন । রবীন্দ্রনাথ তাহার পত্রগুলিতে “ইঙ্গবঙ্গ”দের সম্বন্ধে যেমন কঠিন সমালোচনা ও ব্যঙ্গ করিয়াছিলেন, বিদেশের তুলনায় দেশের সামাজিক রীতি ও প্রথার (বিশেষত স্ত্রীস্বাধীনতার অভাব ও গুরুজনদের সহিত ব্যবহারের প্রচলিত রীতির) সম্বন্ধেও তেমনিই বিরূপ মন্তব্য প্রকাশ করিয়াছিলেন । ভারতী-সম্পাদক দেশীয় প্রথা ও রীতির সমর্থন ও রবীন্দ্রনাথের মন্তব্যের প্ৰতিবাদ করিয়া টিপ্পনী প্ৰকাশ করেন, রবীন্দ্ৰনাথ পরবর্তী পত্রে তাহার উত্তর দেন । এইরূপে বাদপ্রতিবাদ চলে। প্রথম সংস্করণে তাহা মুদ্রিত আছে। পাশ্চাত্য ভ্ৰমণে এই বাদপ্রতিবাদ সম্পূর্ণ ভাবে বর্জিত ৷ প্ৰথম সংস্করণের ষষ্ঠ পত্রের অংশ, সপ্তম নবম ও দশম পত্র, এবং তৎসহ ভারতী-সম্পাদকের মন্তব্যগুলিও, পরিত্যক্ত হইয়াছে। অন্য পত্রগুলিতেও বহুলাংশ বর্জিত ।