পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (বিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/১২০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

× obr রবীন্দ্র-রচনাবলী যতদিন না ধনে হব সমান আসিব না তোমার কাছে । অমিয়া মাথা-বাকানি দিয়ে উঠে দাড়ালো, চলল ঘরের বাইরে । আমি বললেম, “শুনে রাখো, তোমার ভালোবাসার বদলে দেব না তোমাকে অকিঞ্চনের অসম্মান । এই আমার পুরুষের পণ।” দিন যায়, রাত যায়, মাথায় চড়ে ওঠে সোনার মদের নেশা । সঞ্চয়ের ধাক্কা যতই বাড়ে ততই আমাকে চলে ঠেলে । থামতে পারি নে, থামাতে পারি নে তার তাড়না । বিত্ত বাড়ে, খ্যাতি বাড়ে, বুক ফুলিয়ে এগিয়ে চলে আত্মশ্লাঘা ৷ শেষে ডাক্তার বললে, বিশ্রাম চাই নিতান্তই, দেহের কল অচল হয়ে এল বলে । গেলেম দূরদেশে নির্জনে । সেখানে সমুদ্রের একটা খাড়ি এসে মিলেছে পাহাড়তলির অরণ্যে । ভিড় জমেছে গাছে গাছে মাছ-ধরা পাখিদের পাড়ায় । ক্ষীণ নদীটি ঝরে পড়ছে পাহাড় থেকে পাথরের ধাপে ধাপে । তুড়ি ডিঙিয়ে বেঁকে চলা তার ফটিক জলের কলকলানি ধরিয়ে রেখেছে একটি মূল স্বর নির্জনতার। নিত্য-স্নান-করা সেখানকার হাওয়া চলেছে মন্ত্র গুনগুনিয়ে বনের থেকে বনে ।