পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (বিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/১২১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শু্যামলী ) రిఫె দল বেঁধেছে নারকেল গাছ— কেউ খাড়া, কেউ ছেলে-পড়া, দিনরাত ওদের ঝালর-ঝোলা অস্থিরপনা । ফিরে ফিরে আছাড় খেয়ে ফেনিয়ে উঠছে জেদালে ঢেউ মোট মোট কালো পাথরে ; ডাঙায় ছড়িয়ে দিয়ে যাচ্ছে ঝিনুক শামুক খাওলা । ক্লান্ত শরীর ব্যস্ত মনকে ফিরিয়েছে শাস্ত রক্তধারার স্নিগ্ধতায় । কর্মের নেশার বাজ এল মরে । এতকালের খাটুনি মনে হল যেন ফাকি, প্রাণ উঠল দু হাত বাড়িয়ে জীবনের সাচ্চা সোনার জন্তে । সেদিন ঢেউ ছিল না জলে । আশ্বিনের রোদদুর র্কাপছে সমুদ্রের শিহর-লাগা নীলিমায়। বাসার ধারে পুরোনো ঝাউগাছে ধেয়ে আসছে খাপছাড়া হাওয়া, ঝরঝর করে উঠছে তার পাতা । বেগনি রঙের পাখি, বুকের কাছে সাদা, টেলিগ্রাফের তারে বসে লেজ দুলিয়ে ডাকছে মিষ্টি মুকু চাপা স্বরে । শরৎ-আকাশের নির্মল নীলে ছড়িয়ে আছে কোন অনাদি নির্বাসনের গভীর বিষাদ । মনের মধ্যে হুহু করে উঠছে— “ফিরে যেতে হবে ।” থেকে থেকে মনে পড়ছে, সেদিনকার সেই জল-মুছে-ফেলা চোখে ঝলে উঠেছিল যে আলো ।