পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (বিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/১৪৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পরিত্রাণ । $ම්ම් বসন্ত। বেশ, বেশ ঠাকুর । যা নিত্যি জোটে তা থাক পড়ে— এই হঠাতের টানেই তো বাধন কাটে । ধনঞ্জয় – গোপন পথে আপন মনে বাহির হও যে কোন লগনে, হঠাৎ-গন্ধে মাতাও সমীরণ ! বসন্ত । হায় হায় ঠাকুর— বড়ো শুভক্ষণেই বেরিয়েছিলুম— দেহমন শিউরে উঠছে । ধনঞ্জয় |— নিত্য যেথায় আনাগোনা হয় না সেথায় চেনাশোনা, উড়িয়ে ধুলো আসছে কতই জন। বসন্ত । আহা, ভিড়ের মধ্যে হল না দেখা ! দিন বৃথা গেল । ধনঞ্জয় |— কখন পথের বাহির থেকে হঠাৎ বাশি যায় যে ডেকে পথহারাকে করে সচেতন । বসন্ত । এসে ঠাকুর, একবার কোলাকুলি করে নিই। প্রজা । কোথায় চলেছ মহারাজ ? বসন্ত। প্রতাপ আমাকে ডেকেছে, তাই যশোরে চলেছি । প্রজা। রায়গড়ে ফিরে যাও আজ রাত্তিরেই। বসন্ত । কেন বলো দেখি ? প্রজা । নানারকম গুজব কানে আসে ৷ ভালো লাগে না । ধনঞ্জয় । কোথাকার অযাত্রা এরা সব ? নিজেরাও চলবি নে ভয়ে, অন্তকেও চলতে দিবি নে ? t প্রজা। দেখছ না ঠাকুর, পাঠানটা হঠাৎ কখন সরে গেল ? அத ধনঞ্জয় । তোদের সঙ্গ ওর ভালো লাগল না, তাতে আর আশ্চর্য কী রে । সবাই কি তোদের সহ করতে পারে ? প্রজা । তোমার সাদা মন, তুমি বুঝবে না— ওর যে কী মতলব ছিল তা বোঝাই যাচ্ছে । ধনঞ্জয়। সাদা মনে বোঝা যায় না, ময়লা মনে বোঝা সহজ হয়, এ কথা নতুন শোনা গেল। বিশ্বাস নেই, উপর থেকে দেখিস দিঘির পানী, বিশ্বাস করে নীচে ডুব মারিস, দেখবি ডুব-জল। তোরা ডাঙা থেকেই মুখ ফিরিয়ে যাস, আমি না তলিয়ে দেখে ছাড়ি নে ।