পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (বিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/১৬২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

S8V রবীন্দ্র-রচনাবলী প্রতাপাদিত্যের প্রবেশ প্রতাপ । শুনেছ সব কথা ? উদয় । শুনেছি। প্রতাপ। লছমন সর্দারকে হুকুম করেছি, কাল সকালে রামচন্দ্র যখন শয়নঘর থেকে বেরিয়ে আসবে, তখন তার মুণ্ডু কাটা যাবে। আজ রাত্রে অন্তঃপুরের পাহারার ভার তোমার উপরে । উদয় । আমার উপরে মহারাজ ? এ যে আমাকে শাস্তি । প্রতাপ। শাস্তি আমাকেও নয় ? তা বলে রাজার কর্তব্য করতে হবে না ? : বসন্ত । বাবা প্রতাপ ! ( প্রতাপাদিত্য নিরুত্তর ) বাব| প্রতাপ, এ ও কি সম্ভব ? প্রতাপ । কেন সম্ভব নয় ? বসন্ত । ছেলেমানুষ, সে তো অবজ্ঞার পাত্র, সে কি তোমার ক্রোধের যোগ্য ? প্রতীপ। আগুনে হাত দিলে হাত পুড়ে যায়, এ কথা যে বোকা না’ও বোঝে তারও হাত পোড়ে। দুরবুদ্ধি যার মাথায় জোগাতে পারে সে বুদ্ধির ফলটা কী হবে সে কি তার মাথায় জোগায় না ? দুঃখ এই, বুদ্ধিটা যখন মাথায় জোগাবে মাথাটা তখন দেহে থাকবে না । বসন্ত। অপরাধ যে করে সে দুর্বল, ক্ষমা যে করে শক্তি তারই, এ কথা ভূলো না। প্রতাপ । দেখে পিতৃব্য ঠাকুর, রায়বংশের কিসে মান-অপমান সে বোধ যদি তোমার থাকবে তা হলে পাকা মাথায় আজ মোগল-বাদশার শিরোপা জড়িয়ে বেড়াতে পারতে কি ? তোমারও লাঞ্ছিত মাথার স্থান এই ধুলায়, আমারই দুর্ভাগ্য তোমাকে বঁচিয়ে দিলে। এই তোমাকে স্পষ্ট বললুম। খুড়োমশায়, এখন আমার নিদ্রার সময় । বসন্ত। বুঝেছি প্রতাপ, একবার যে ছুরি তোমার খাপ থেকে বেরোয় রক্ত না নিয়ে সে ফিরবে না। তা নিক, যে তার প্রথম লক্ষ্য ছিল এখনো তো সামনেই আছে। প্রতাপ, একবার বিভার কথা ভেবে দেখো । প্রতাপ । আচ্ছা, তবে ডাকে বিভাকে । বিভার প্রবেশ ওই-ষে এসেছে। বিভা ! বিভা ৷ মহারাজ ! প্রতাপ । সকল কথা শুনেছ বিভা ? বিভা । হা ।