পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (বিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/১৯৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ృbyరి রবীন্দ্র-রচনাবলী ধনঞ্জয় | রাস্তায় । প্রতীপ। বৈরাগী, আমার এক-একবার মনে হয় তোমার ওই রাস্তাই ভালো— আমার এই রাজ্যটা কিছু না। ধনঞ্জয়। মহারাজ, রাজ্যটাও তো রাস্তা। চলতে পারলেই হল । ওটাকে যে পথ বলে জানে সেই তো পথিক ; আমরা কোথায় লাগি । তা হলে অনুমতি যদি হয় তো এবারকার মতো বেরিয়ে পড়ি । প্রতাপ। আচ্ছ, কিন্তু মাধবপুরে যেয়ে না। ধনঞ্জয় । সে কেমন করে বলি, যখন নিয়ে যাবে তখন কণর বাবার সাধ্য বলে যে যাব না । [ প্রস্থান মন্ত্রী। মহারাজ ! ওই তো দেখি যুবরাজ আসছেন। প্রতাপ । তাই তো, পলায় নি তবে । উদয়াদিত্যের প্রবেশ প্রতাপ। কী, তুমি যে মুক্ত দেখি ? উদয় । কেমন করে বলব মহারাজ। কারাগার পুড়লেই কি কারাগার যায়। প্রতাপ । তুমি যে পালিয়ে গেলে না ? উদয়। মেয়াদ না ফুরোলে পালাব কী করে । মহারাজের সঙ্গে আমার যে চিরবন্ধনের সম্বন্ধ, সেটা যখন নিজে ছিন্ন করে দেবেন সেইদিনই তো ছাড়া পাব। প্রতাপ । তোমাকে ত্যাগ ক’রে ? উদয় । তা ছাড়া আর কী বলব। আমাকে গ্রহণ করে আমাদের তো কারো কোনো মুখ নেই। প্রতাপ। তুমি অথচ সিংহাসনের যোগ্য নও, সেই সিংহাসনে তোমার অধিকার আছে, এর থেকেই যত দুঃখ । যেখানে যার স্থান নয় সেইখানেই তার বন্ধন। উদয় । না মহারাজ, আমি যোগ্য নই। আপনার এই সিংহাসন হতে আমাকে অব্যাহতি দিন এই ভিক্ষণ । প্রতাপ। তুমি যা বলছ তা ষে সত্যই তোমার হৃদয়ের ভাব তা কী করে জানব । উদয় । আজ আমি মা-কালীর চরণ স্পর্শ করে শপথ করব, আপনার রাজ্যের স্বচ্যগ্র ভূমিও আমি কখনো শাসন করব না ; সমরাদিত্যই আপনার রাজ্যের উত্তরাধিকারী ।