পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (বিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/২৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পত্রপুট চাদের পেয়ালা ছাপিয়ে দিয়ে উপচিয়ে পড়েছে স্বৰ্গীয় মদের ফেনা । বনের মর্মরধ্বনি বাতাসের স্পর্ধায় ধৈর্য হারিয়েছে অকস্মাং কল্লোলোচ্ছ্বাসে । স্নিগ্ধ তুমি, হিংস্ৰ তুমি, পুরাতনী, তুমি নিত্যনবীন, অনাদি স্বাক্টর যজ্ঞস্থতাগ্নি থেকে বেরিয়ে এসেছিলে সংখ্যাগণনার অতীত প্রত্যুষে, তোমার চক্রতীর্থের পথে পথে ছড়িয়ে এসেছ শতশত ভাঙা ইতিহাসের অর্থলুপ্ত অবশেষ— বিনা বেদনায় বিছিয়ে এসেছ তোমার বর্জিত স্বষ্টি অগণ্য বিস্মৃতির স্তরে স্তরে । জীবপালিনী, আমাদের পুযেছ তোমার খণ্ডকালের ছোটো ছোটো পিঞ্জরে । তারই মধ্যে সব খেলার সীমা, সব কীর্তির অবসান। আজ আমি কোনো মোহ নিয়ে আসি নি তোমার সম্মুখে, এতদিন যে দিনরাত্রির মালা গেথেছি বসে বসে তার জন্যে অমরতার দাবি করব না তোমার দ্বারে । তোমার অযুত নিযুত বংসর স্বর্যপ্রদক্ষিণের পথে যে বিপুল নিমেষগুলি উল্মীলিত নিমীলিত হতে থাকে তারই এক ক্ষুদ্র অংশে কোনো একটি আসনের সত্যমূল্য যদি দিয়ে থাকি, জীবনের কোনো একটি ফলবান খণ্ডকে 蛾 যদি জয় করে থাকি পরম দুঃখে তবে দিয়ে তোমার মাটির ফোটার একটি তিলক আমার কপালে ; সে চিহ্ন যাবে মিলিয়ে যে রাত্রে সকল চিহ্ন পরম অচিনের মধ্যে যায় মিশে ।