পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (বিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/২৯৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

&ዓbr রবীন্দ্র-রচনাবলী Nව * गएको বহুকাল গত হল তোমাদের উভয়কে পত্র লিখেছিলুম। তোমাদের সম্মিলিত নৈঃশব্য থেকে অনুমান করি সেই যুগলপত্র কৈবল্য লাভ করেছে। এমনতরো মহতী বিনষ্টি ভারতীয় ডাকঘরে আজকাল মাঝে মাঝে ঘটছে বলে শঙ্কা করি । এই কারণেই আজকাল চিঠি লিখতে উৎসাহ বোধ করি নে। অন্তত তোমাদের দিক থেকে সাড়া না পেলে চুপ করে যাই। নিঃশব রাত্রির প্রহরগুলোকে দীর্ঘ বলে মনে হয় ; তেমনিতরোই নিশ্চিঠি কাল কল্পনায় অত্যন্ত লম্বা হয়ে ওঠে। তাই থেকে থেকে মনে হয় যেন লোকাস্তরপ্রাপ্তি হয়েছে। তাই পাজি গেছে বদল হয়ে, ঘড়ি বাজছে লম্বা তালে। দ্রৌপদীর বস্ত্রহরণের মতো আমার দেশে যাবার সময়কে যতই টান মারছে ততই অফুরান হয়ে বেড়ে চলেছে। যেদিন ফিরব সেদিন নিশ্চিতই ফিরব— আজকের দিন যেমন অব্যবহিত নিকটে সেদিনও তেমনিই নিকটে আসবে, এই মনে করে সাম্ভুনার চেষ্টা করি । তা হোক, আপাতত রাশিয়ায় এসেছি— না এলে এ জন্মের তীর্থদর্শন অত্যন্ত অসমাপ্ত থাকত। এখানে এরা যা কাও করছে তার ভালোমনা বিচার করবার পূর্বে সর্বপ্রথমেই মনে হয়, কী অসম্ভব সাহল। সনাতন বলে পদার্থটা মানুষের অস্থিমজ্জায় মনে-প্রাণে হাজারখানা হয়ে আঁকড়ে আছে ; তার কত দিকে কত মহল, কত দরজায় কত পাহারা, কত যুগ থেকে কত ট্যাকসো আদায় করে তার তহবিল হয়ে উঠেছে পর্বতপ্রমাণ। এর তাকে একেবারে জটে ধরে টান মেরেছে ; ভয় ভাবনা সংশয় কিছু মনে নেই। সনাতনের গদি দিয়েছে বাটিয়ে, নূতনের জন্তে একেবারে নূতন আসন বানিয়ে দিলে। পশ্চিম মহাদেশ ৰিজ্ঞানের জাদুবলে দুঃসাধ্য সাধন করে, দেখে মনে মনে তারিফ করি। কিন্তু এখানে যে প্রকাও ব্যাপার চলছে সেটা দেখে আমি সব চেয়ে বেশি বিস্মিত হয়েছি। শুধু যদি একটা ভীষণ ভাঙচুরের কাও হত তাতে তেমন আশ্চর্য হতুম না— কেননা নাস্তানাবুদ্ধ করবার শক্তি এদের যথেষ্ট আছে—কিন্তু দেখতে পাচ্ছি, বহুদূরব্যাপী একটা ক্ষেত্র নিয়ে এরা একটা নূতন জগৎ গড়ে তুলতে কোমর বেঁধে লেগে গেছে। দেরি সইছে না ; কেননা জগৎ জুড়ে এদের প্রতিকূলতা, সবাই এদের বিরোধী— যত শীঘ্ৰ পারে এদের খাড়া হয়ে দাড়াতে হবে— হাতে হাতে প্রমাণ করে দিতে হবে, এরা যেটা চাচ্ছে সেটা ভুল নয়, ফাকি নয়। হাজার বছরের বিরুদ্ধে দশ-পনেরো বছর জিতবে বলে পণ করেছে। অন্ত দেশের তুলনায় এদের অর্থের জোর অতি সামান্ত, প্রতিজ্ঞার জোর দুর্ধর্ষ। এই-যে বিপ্লবটা ঘটল এটা রাশিয়াতে ঘটবে বলেই অনেক কাল থেকে অপেক্ষ