পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (বিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৩২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রবীন্দ্র-রচনাবলী সে যুগের পালানো বাণী ধরবে বলে ঘুরিয়ে ফেলছে গানের জাল, স্বরের হোওয়া দিয়ে খুঁজে খুঁজে ফিরছে হারানো পরিচয়কে । সমুখে ছাদ ছাড়িয়ে উঠেছে বাদামগাছের মাথা, উপরে উঠল কৃষ্ণচতুর্থীর চাদ । ডাকলেম নাম ধরে । তীক্ষুবেগে উঠে দাড়ালো সে, ভ্ৰকুটি করে বললে, আমার দিকে ফিরে— “এ কী অন্যায়, কেন এলে লুকিয়ে ।” কোনো উত্তর করলেম না । বললেম না, প্রয়োজন ছিল না এই তুচ্ছ ছলনার । বললেম না, আজি সহজে বলতে পারতে ‘এসো’, বলতে পারতে খুশি হয়েছি । মধুময়ের উপর পড়ল ধূলার আবরণ। পরদিন ছিল হাটবার জানলায় বসে দেখছি চেয়ে । রৌদ্র ধৃ ধূ করছে পাশের সেই খোলা ছাদে । তার স্পষ্ট আলোয় বিগত বসন্তরাত্রের বিহবলতা সে দিয়েছে ঘুচিয়ে । নির্বিশেষে ছড়িয়ে পড়ল আলো মাঠে বাটে, মহাজনের টিনের ছাদে, শাক-সবজির ঝুড়ি-চুপড়িতে, অঁাটিবাধা খড়ে, হাড়ি-মালসার ভূপে, নতুন গুড়ের কলসীর গায়ে । সোনার কাঠি ছুইয়ে দিল মহানিম গাছের ফুলের মঞ্চরিতে।