পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (বিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৩৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পত্রপুট さン পথের ধারে তালের গুড়ি অঁাকড়ে উঠেছে অশথ, অন্ধ বৈরাগী তারই ছায়ায় গান গাইছে হাড়ি বাজিয়ে— কাল আসব বলে চলে গেল, আমি যে সেই কালের দিকে তাকিয়ে আছি। কেনাবেচার বিচিত্র গোলমালের জমিনে ঐ স্বরের শিল্পে বুনে উঠছে যেন সমস্ত বিশ্বের একটা উৎকণ্ঠার মন্ত্ৰ— ‘তাকিয়ে আছি । একজোড়া মোষ উদাস চোখ মেলে বয়ে চলেছে বোঝাই গাড়ি, গলায় বাজছে ঘণ্টা, চাকার পাকে পাকে টেনে তুলছে কাতর ধ্বনি। আকাশের আলোয় আজ যেন মেঠো বাশির স্বর মেলে দেওয়া । সব জড়িয়ে মন ভুলেছে। বেদমন্ত্রের ছন্দে আবার মন বললে— মধুময় এই পার্থিব ধূলি। কেরোসিনের দোকানের সামনে চোখে পড়ল একজন একেলে বাউল । তালিদেওয়া আলখাল্লার উপরে কোমরে-বাধা একটা বায়া । লোক জমেছে চারি দিকে । হাসলেম, দেখলেম অদ্ভূতেরও সংগতি আছে এইখানে, এও এসেছে হাটের ছবি ভর্তি করতে । ওকে ডেকে নিলেম জানলার কাছে, ও গাইতে লাগল— হাট করতে এলেম আমি অধরার সন্ধানে, সবাই ধরে টানে আমায়, এই যে গে। এইখানে।