রাশিয়ার চিঠি HIV প্রবল। জাপান অল্পকালের মধ্যে ধনের যন্ত্রবাহনকে আয়ত্ত করে নিয়েছে, যদি ন৷ সম্ভব হত তা হলে যন্ত্রী যুরোপের ষড়যন্ত্রে সে ধনে-প্রাণে মারা যেত। আমাদের ভাগ্যে সে স্বযোগ ঘটল না, কেননা লোভ ঈর্ষাপরায়ণ। এই প্রকাগু লোভের আওতায় আমাদের ধনপ্রাণ মুষড়ে এল, তৎপরিবর্তে রাজা আমাদের সাত্বনা দিয়ে বলছেন, “এখনো ধনপ্রাণের যেটুকু বাকি সেটুকু রক্ষা করবার জন্যে আইন এবং চৌকিদারের ব্যবস্থাভার রইল আমার হাতে।” এ দিকে আমাদের অন্নবস্ত্র বিদ্যাবুদ্ধি বন্ধক রেখে কণ্ঠাগত প্রাণে আমরা চৌকিদারের উর্দির খরচ জোগাচ্ছি। এই-যে সাংঘাতিক ঔদাসীন্ত এর মূলে আছে লোভ। সকলপ্রকার জ্ঞানে ও কর্মে যেখানে শক্তির উৎস বা পীঠস্থান সেখান থেকে বহু নীচে দাড়িয়ে এতকাল আমরা ই করে উপরের দিকে তাকিয়ে আছি আর সেই উধ্বলোক থেকে এই আশ্বাসবাণী শুনে আসছি, “তোমাদের শক্তি ক্ষয় যদি হয় ভয় কী, আমাদের শক্তি আছে, আমরা তোমাদের রক্ষণ করব ।” যার সঙ্গে মানুষের লোভের সম্বন্ধ তার কাছ থেকে মানুষ প্রয়োজন উদ্ধার করে, কিন্তু কখনো তাকে সম্মান করে না । যাকে সম্মান করে না তার দাবিকে মাতুষ যথাসম্ভব ছোটো করে রাখে ; অবশেষে সে এত সস্তা হয়ে পড়ে যে, তার অসামান্য অভাবেও সামান্য খরচ করতে গায়ে বাজে। আমাদের প্রাণরক্ষণ ও মহন্তত্বের লজ্জারক্ষার জন্যে কতই কম বরাদ সে কারো অগোচর নেই। অন্ন নেই, বিদ্যা নেই, বৈদ্য নেই, পানের জল পাওয়া যায় পাক ছেঁকে ; কিন্তু চৌকিদারের অভাব নেই, আর আছে মোট মাইনের কর্মচারী— তাদের মাইনে গালফ স্টমের মতো সম্পূর্ণ চলে যায় ব্রিটিশ দ্বীপের শৈত্যনিবারণের জন্যে, তাদের পেনসন জোগাই আমাদের অস্ত্যেষ্টিসৎকারের খরচের অংশ থেকে । এর একমাত্র কারণ, লোভ অন্ধ, লোভ নিষ্ঠুর— ভারতবর্ষ ভারতেশ্বরদের লোভের সামগ্ৰী । অথচ কঠিন বেদনার অবস্থাতেও এ কথা আমি কখনো অস্বীকার করি নে যে, ইংরেজের স্বভাবে ঔদার্য আছে, বিদেশীয় শাসনকার্যে অন্ত যুরোপীয়দের ব্যবহার ইংরেজের চেয়েও কৃপণ এবং নিষ্ঠুর। ইংরেজ জাতি ও তার শাসননীতি সম্বন্ধে বাক্যে ও আচরণে আমরা যে বিরুদ্ধতা প্রকাশ করে থাকি তা আর-কোনো জাতের শাসনকর্তাদের সম্বন্ধে সম্ভবপর হত না ; যদি-বা হত তবে তার দগুনীতি আরো অনেক দুঃসহ হত, স্বয়ং যুরোপে এমন-কি আমেরিকাতেও তার প্রমাণের অভাব নেই। প্রকাশ্যভাবে বিদ্রোহঘোষণাকালেও রাজপুরুষদের কাছে পীড়িত হলে আমরা ধখন সবিস্ময়ে নালিশ করি তখন প্রমাণ হয় যে, ইংরেজ জাতির প্রতি আমাদের নিগৃঢ় শ্রদ্ধা
