পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (বিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৩৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২৬ রবীন্দ্র-রচনাবলী মনে পড়ছে দূর বাপযুগের শৈশবস্থতি। গাছগুলো স্তম্ভিত, রাত্রির নিঃশব্দত পুঞ্জিত যেন দেহ নিয়ে। ঘাসের অস্পষ্ট সবুজে সারি সারি পড়েছে ছায়া । দিনের বেলায় জীবনযাত্রার পথের ধারে সেই ছায়াগুলি ছিল সেবাসহচরী ; তখন রাখালকে দিয়েছে আশ্রয়, মধ্যাহের তীব্রতায় দিয়েছে শাস্তি । এখন তাদের কোনো দায় নেই জ্যোৎস্নারাতে ; রাত্রের আলোর গায়ে গায়ে বসেছে ওরা, ভাইবোনে মিলে বুলিয়েছে তুলি খামখেয়ালি রচনার কাজে । আমার দিনের বেলাকার মন আপন সেতারের পর্দা দিয়েছে বদল ক’রে । যেন চলে গেলেম পৃথিবীর কোনো প্রতিবেশী গ্রহে, তাকে দেখা যায় দুরবীনে। যে গভীর অনুভূতিতে নিবিড় হল চিত্ত সমস্ত স্থষ্টির অস্তরে তাকে দিয়েছি বিস্তীর্ণ ক’রে । ঐ চাদ ঐ তারা ঐ তম:পুঞ্জ গাছগুলি এক হল, বিরাট হল, সম্পূর্ণ হল অামার চেতনায় । বিশ্ব আমাকে পেয়েছে, আমার মধ্যে পেয়েছে আপনাকে অলস কবির এই সার্থকতা। শাস্তিনিকেতন কার্তিক শুক্লাষষ্ঠ ১৩৪২