পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (বিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৪৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রবীন্দ্র-রচনাবলী জীবনের পথে মানুষ যাত্রা করে নিজেকে খুঁজে পাবার জন্তে। গান যে মানুষ গায় দিয়েছে সে ধরা, আমার অস্তরে ; যে মানুষ দেয় প্রাণ দেখা মেলে নি তার। দেখেছি শুধু আপনার নিভৃত রূপ ছায়ায় পরিকীর্ণ, যেন পাহাড়তলিতে একখানা অকুত্তরঙ্গ সরোবর। তীরের গাছ থেকে সেখানে বসন্তশেষের ফুল পড়ে ঝরে, ছেলেরা ভাসায় খেলার নৌকো, কলস ভরে নেয় তরুণীরা বুদবুফেনিল গগরধ্বনিতে। নববর্ষার গম্ভীর বিরাট শু্যামমহিমা তার বক্ষতলে পায় লীলাচঞ্চল দোসরটিকে । কালবৈশাখী হঠাৎ মারে পাখার ঝাপট, স্থির জলে আনে অশাস্তির উন্মন্থন, অধৈর্যের আঘাত হানে তটবেষ্টনের স্থাবরতায় ; হঠাৎ বুঝি তার মনে হয়— গিরিশিখরের পাগলা-ঝোরা পোষ মেনেছে গিরিপদতলের বোবা জলরাশিতে— বন্দী ভুলেছে আপনার উদবেলকে, উদামকে— পাথর ডিঙিয়ে আপন সীমানা চূৰ্ণ করতে করতে নিরুদ্দেশের পথে অজানার সংঘাতে বাকে বাকে গৰ্জিত করল না সে আপন অবরুদ্ধ বাণী, আবর্তে আবর্তে উৎক্ষিপ্ত করল না অন্তর্গঢ়কে। মৃত্যুর গ্রন্থি থেকে ছিনিয়ে ছিনিয়ে যে উদ্ধার করে জীবনকে