পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (বিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৫৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

88 রবীন্দ্র-রচনাবলী ভেঙে-পড়া শু্যাওলা-ধরা পাচিলের উপর একলা ব’সে । প্রথম প্রাণের বহ্নি-উৎস থেকে নেমেছে তেজোময়ী লহরী, দিয়েছে আমার নাড়ীতে অনির্বচনীয়ের স্পন্দন । আমার চৈতন্তে গোপনে দিয়েছে নাড়া অনাদিকালের কোন অস্পষ্ট বার্তা, প্রাচীন সূর্যের বিরাট বাষ্পদেহে বিলীন আমার অব্যক্ত সত্তার রশ্মিস্ফুরণ। হেমস্তের রিক্তশস্ত প্রাস্তরের দিকে চেয়ে আলোর নিঃশব্দ চরণধ্বনি শুনেছি আমার রক্ত-চাঞ্চল্যে । সেই ধ্বনি আমার অনুসরণ করেছে জন্মপূর্বের কোন পুরাতন কালযাত্রা থেকে। বিস্ময়ে আমার চিত্ত প্রসারিত হয়েছে অসীম কালে যখন ভেবেছি স্বষ্টির আলোকতীর্থে সেই জ্যোতিতে আজ আমি জাগ্রত যে জ্যোতিতে অযুত নিযুত বৎসর পূর্বে সুপ্ত ছিল আমার ভবিষ্যৎ । আমার পূজা আপনিই সম্পূর্ণ হয়েছে প্রতিদিন এই জাগরণের আনন্দে । আমি ব্রাত্য, আমি মন্ত্রহীন, রীতিবন্ধনের বাহিরে আমার আত্মবিস্তৃত পূজা কোথায় হল উৎস্যঃ জানতে পারি নি। যখন বালক ছিলেম ছিল না কেউ সাথি, দিন কেটেছে একা এক চেয়ে চেয়ে দুরের দিকে।