পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (বিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৭০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Qbア রবীন্দ্র-রচনাবলী ঝিলিমিলি করে আলোছায়া চুপে চুপে চলতি হাওয়ার পায়ের চিহ্নরূপে । জ্যৈষ্ঠ-আষাঢ় মাসে আমের শাখায় আঁখি ধেয়ে যায় সোনার রসের আশে । লিচু ভরে যায় ফলে, বাদুড়ের সাথে দিনে আর রাতে অতিথির ভাগ চলে । বেড়ার ওপারে মৈমুমি ফুলে রঙের স্বপ্ন বোন, চেয়ে দেখে দেখে জানালার নাম রেখেছি— ‘নেত্রকোণা’ । ওরাওঁ জাতের মালী ও মালিনী ভোর হতে লেগে আছে মাটি খোড়াখুড়ি, জল ঢালাঢালি গাছে। মাটিগড়া যেন নিটোল অঙ্গ, মাটির নাড়ীর টানে গাছপালাদের স্বজাত বলেই জানে। রাত পোহালেই পাড়ার গোয়ালা গাভীদুটি নিয়ে আসে, অধীর বাছুর ছুটোছুটি করে পাশে । সাড়ে ছ’টা বাজে, সোজা হয়ে রোদ চলে আসে মোর ঘরে, পথে দেখা দেয় খবরওআলা বাইক-রথের পরে। পাচিল পেরিয়ে পুরোনো দোতলা বাড়ি, আলসের ধারে এলোকেশিনীরা ঝোলায় সিক্ত শাড়ি । পাড়ার মেয়েরা জল নিতে আসে ঘাটে, সবুজ গহনে দু-চোখ ডুবিয়ে সোনার সকাল কাটে । বাংলাদেশের বনপ্রকৃতির মন শহর এড়িয়ে রচিল এখানে ছায়া দিয়ে ঘেরা কোণ বাংলাদেশের গৃহিণী তাহার সাথে আপন স্নিগ্ধ হাতে সেবার অর্ঘ্য করেছে রচনা নীরব-প্রণতি-ভরা, তারি আনন্দ কবিতায় দিল ধরা।