পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (বিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৯৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শু্যামলী তেঁতুলের ফুল জীবনের অনেক ধন পাই নি, নাগালের বাইরে তারা ; হারিয়েছি তার চেয়ে অনেক বেশি হাত পাতি নি ব’লেই। সেই চেনা সংসারে অসংস্কৃত পল্লীরূপসীর মতো ছিল এই ফুল মুখঢাকা, অকাতরে উপেক্ষা করেছে উপেক্ষাকে এই তেঁতুলের ফুল। বেঁটে গাছ পাচিলের ধারে, বাড়তে পারে নি কৃপণ মাটিতে ; উঠেছে ঝাকড়া ডাল মাটির কাছ ঘেঁষে। ওর বয়স হয়েছে যায় নি বোঝা । অদূরে ফুটেছে নেবু ফুল, গাছ ভরেছে গোলকচাপায়, কোণের গাছে ধরেছে কাঞ্চন, কুড়চি-শাখা ফুলের তপস্তায় মহাশ্বেতা । স্পষ্ট ওদের ভাষা, ওরা আমাকে ডাক দিয়ে করেছে আলাপ | আজ যেন হঠাৎ এল কানে কোন ঘোমটার নীচে থেকে চুপিচুপি কথা । দেখি পথের ধারে তেঁতুলশাখার কোণে লাজুক একটি মঞ্জরী, মৃদু বসন্তী রঙ, মৃদু একটি গন্ধ, চিকন লিখন তার পাপড়ির গায়ে।