পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (বিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৯৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

br8 রবীন্দ্র-রচনাবলী কিন্তু যখন বসন্তের পর বসস্ত এসেছে, অশোক বকুল পেয়েছে সম্মান ; ওকে জেনেছি যেন ঋতুরাজের বাহির-দেউড়ির দ্বারী, উদাসীন, উদ্ধত । সেদিন কে জেনেছিল— ঐ রূঢ় বৃহতের অস্তরে সুন্দরের নম্রতা, কে জেনেছিল বসন্তের সভায় ওর কৌলীন্ত । ফুলের পরিচয়ে আজ ওকে দেখছি । যেন গন্ধৰ্ব চিত্ররথ, যে ছিল অর্জুনবিজয়ী মহারথী গানের সাধন করছে সে অাপন মনে এক নন্দনবনের ছায়ার আড়ালে গুন গুন স্বরে । সেদিনকার কিশোর কবির চোখে ঐ প্রৌঢ় গাছের গোপন যৌবনমদিরত যদি ধরা পড়ত উপযুক্ত লগ্নে, মনে আসছে, তবে মৌমাছির পাখা-উতল-করা কোন-এক পরম দিনের তরুণ প্রভাতে একটি ফুলের গুচ্ছ করতেম চুরি পরিয়ে দিতেম কেঁপে-ওঠা আঙুল দিয়ে কোন একজনের আনন্দে-রাঙা কৰ্ণমূলে । যদি সে শুধাত, কী নাম, হয়তো বলতেম— ঐ যে রৌদ্রের এক টুকরো পড়েছে তোমার চিবুকে ওর যদি কোনো নাম তোমার মুখে আসে একেও দেব সেই নামটি । শান্তিনিকেতন ৭ জুন ১৯৩৬