পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ষড়্‌বিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/১১৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

: ۵۰ s রবীন্দ্র-রচনাবলী তার ঐ এক চকিতের দান সংসারের আর-সমস্তকে ছাড়িয়ে আমারই হাতে এলে পৌচেছে ! একে আমি রাখব গানে গেঁথে, ছন্দে বেঁধে ; আমি একে রাখব সৌন্দর্ষের অমরাবতীতে । পৃথিবীতে রাজার প্রতাপ, ধনীর ঐশ্বর্য হয়েছে মরবারই জন্যে। কিন্তু, চোখের জলে কি সেই অমৃত নেই যাতে এক নিমেষের চাউনিকে চিরকাল বাচিয়ে রাখতে পারে । গানের স্বর বললে, “আচ্ছা, আমাকে দাও । আমি রাজার প্রতাপকে স্পর্শ করি নে, ধনীর ঐশ্বর্ধকেও না, কিন্তু ঐ ছোটো জিনিসগুলিই আমার চিরদিনের ধন ; ঐগুলি দিয়েই আমি অসীমের গলার হার গাথি ।” একটি দিন মনে পড়ছে সেই দুপুরবেলাটি ক্ষণে ক্ষণে বৃষ্টিধারা ক্লাস্ত হয়ে আসে, আবার দমকা হাওয়া তাকে মাতিয়ে তোলে । ঘরে অন্ধকার, কাজে মন যায় না। যন্ত্রট হাতে নিয়ে বর্ষার গানে মল্লারের স্বর লাগালেম । পাশের ঘর থেকে একবার সে কেবল দুয়ার পর্যন্ত এল । আবার ফিরে গেল । আবার একবার বাইরে এসে দাড়াল। তার পরে ধীরে ধীরে ভিতরে এসে বলল । হাতে তার সেলাইয়ের কাজ ছিল, মাথা নিচু করে সেলাই করতে লাগল। তার পরে সেলাই বন্ধ ক’রে জানলার বাইরে ঝাপসা গাছগুলোর দিকে চেয়ে রইল । বৃষ্টি ধরে এল, আমার গান থামল । সে উঠে চুল বাধতে গেল । এইটুকু ছাড়া আর কিছুই না। বৃষ্টিতে গানেতে অকাজে আঁধারে জড়ানো কেবল সেই একটি দুপুরবেলা । 呜 ইতিহাসে রাজাবাদশার কথা, যুদ্ধবিগ্রহের কাহিনী, সস্তা হয়ে ছড়াছড়ি যায় । কিন্তু, একটি দুপুরবেলার ছোটো একটু কথার টুকরো দুর্লভ রত্বের মতো কোঁটোর মধ্যে লুকোনো রইল, দুটি লোক তার খবর জানে। தி