পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ষড়্‌বিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/১২৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১১৬ রবীন্দ্র-রচনাবলী বন্ধু বললে, “আজ ফুটবল ম্যাচ দেখতে যাবে না ?” ও বললে, "না, আমার জরভাব ।” বিকেলে মা এসে বললে, ”খাবার ঠাণ্ডা হয়ে গেল।” ও বললে, “খিদে নেই।” সন্ধের সময় স্ত্রী এসে বললে, “তোমার সেই নতুন লেখাটা শোনাবে না ?” ও বললে, "মাথা ধরেছে।” ভাগ্নে এসে বললে, “আমার নাম ফিরিয়ে দাও।” মামা ঠাস করে তার গালে এক চড় কষিয়ে দিলে। ভুল স্বর্গ লোকটি নেহাত বেকার ছিল । তার কোনো কাজ ছিল না, কেবল শখ ছিল নানা রকমের । ছোটো ছোটো কাঠের চৌকোয় মাটি ঢেলে তার উপরে সে ছোটো ছোটো ঝিমুক সাজাত। দূর থেকে দেখে মনে হত যেন একটা এলোমেলো ছবি, তার মধ্যে পাখির কাক ; কিম্বা এবড়ো-খেবড়ো মাঠ, সেখানে গোরু চরছে ; কিম্বা উচুনিচু পাহাড়, তার গা দিয়ে ওটা বুঝি ঝরনা হবে, কিম্ব পায়ে-চলা পথ । বাড়ির লোকের কাছে তার লাঞ্ছনার সীমা ছিল না । মাঝে মাঝে পণ করত পাগলামি ছেড়ে দেবে, কিন্তু পাগলামি তাকে ছড়িত না । २ • কোনো কোনো ছেলে আছে সারা বছর পড়ায় ফাকি দেয়, অথচ পরীক্ষায় খামকা পাশ করে ফেলে। এর সেই দশা হল । সমস্ত জীবনটা অকাজে গেল, অথচ মৃত্যুর পরে খবর পেলে যে, তার স্বর্গে যাওয়া মঞ্জুর । কিন্তু, নিয়তি স্বর্গের পথেও মানুষের সঙ্গ ছাড়ে না। দূতগুলো মার্ক ভুল করে তাকে কেজো লোকের স্বর্গে রেখে এল । এই স্বর্গে আর সবই আছে, কেবল অবকাশ নেই। এখানে পুরুষরা বলছে, “ইফ ছাড়বার সময় কোথা ।” মেয়েরা বলছে, "চললুম, ভাই, কাজ রয়েছে পড়ে।” সবাই বলে, “সময়ের মূল্য আছে।” কেউ বলে না,