পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ষড়্‌বিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/১৫১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

লিপিক \రి:S আজ সে স্পষ্ট দেখলে, দিনে দিনে তার দেবতার মুখ মন্ত্রীর মুখের মতো হয়ে উঠছে । তুলি মাটিতে ফেলে দিয়ে বললে, “মন্ত্রীরই জিত হল।” সেইদিনই পট নিয়ে গিয়ে মন্ত্রীকে অভিরাম বললে, “এই নাও সেই পট, তোমার ছেলেকে দিয়ে৷ * মন্ত্রী বললে, “কত দাম ।” অভিরাম বললে, “আমার দেবতার ধ্যান তুমি কেড়ে নিয়েছিলে, এই পট দিয়ে সেই ধ্যান ফিরে নেব ।” মন্ত্রী কিছুই বুঝতে পারলে না। - নতুন পুতুল এই গুণী কেবল পুতুল তৈরি করত ; সে পুতুল রাজবাড়ির মেয়েদের খেলার জন্তে । বছরে বছরে রাজবাড়ির আঙিনায় পুতুলের মেলা বলে । সেই মেলায় সকল কারিগরই এই গুণীকে প্রধান মান দিয়ে এসেছে। যখন তার বয়স হল প্রায় চার কুড়ি, এমন সময় মেলায় এক নতুন কারিগর এল। তার নাম কিষণলাল, বয়স তার নবীন, নতুন তার কায়দা । যে পুতুল লে গড়ে তার কিছু গড়ে কিছু গড়ে না, কিছু রঙ দেয় কিছু বাকি রাখে । মনে হয়, পুতুলগুলো যেন ফুরোয় নি, যেন কোনোকালে ফুরিয়ে যাবে না। নবীনের দল বললে, “লোকটা সাহস দেখিয়েছে।” প্রবীণের দল বললে, "একে বলে সাহল ? এ তো স্পর্ধা।” কিন্তু, নতুন কালের নতুন দাবি । এ কালের রাজকঙ্কার বলে, “আমাদের এই পুতুল চাই ।” সাবেক কালের অনুচরেরা বলে, “আরে ছিঃ * শুনে তাদের জেদ বেড়ে যায় । বুড়োর দোকানে এবার ভিড় নেই। তার বাকাভরা পুতুল যেন খেয়ার অপেক্ষায় ঘাটের লোকের মতো ও পারের দিকে তাকিয়ে বসে রইল । এক বছর যায়, ছ বছর বায়, বুড়োর নাম সবাই ভূলেই গেল। কিষণলাল হল রাজবাড়ির পুতুলহাটের সর্দায়।