পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ষড়্‌বিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/১৫৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

লিপিকা 584 যুক্তির মুখে তীয় বিদ্রুপ তীরের ফলায় আলোর মতো ঝিকমিক্‌ করে উঠল তখন গুরু বিস্থিত হলেন, এবং বিরক্ত হলেন । রুচির কপালে ঘাম দেখা দিল, সে বুদ্ধি স্থির রাখতে পারলে না। কৌশিক তাকে পরাভবের শেষ কিনারায় নিয়ে গিয়ে তবে ছেড়ে দিলে । ক্রোধে অধ্যাপকের বাক্রোধ হল, আর রুচির চোখ দিয়ে ধারা বেয়ে জল পড়তে | রাজা মন্ত্রীকে বললেন, “এখন, বিবাহের দিন স্থির করো।” কৌশিক আসন ছেড়ে উঠে জোড় হাতে রাজাকে বললে, “ক্ষমা করবেন, এ বিবাহ আমি করব না ।” রাজা বিস্থিত হয়ে বললেন, “জয়লব্ধ পুরস্কার গ্রহণ করবে না ?” কৌশিক বললে, “জয় আমারই থাক, পুরস্কার অন্তের হোক।” অধ্যাপক বললেন, “মহারাজ, আর এক বছর সময় দিন, তার পরে শেষ পরীক্ষা ।” সেই কথাই স্থির হল। G. কৌশিক পাঠশালা ত্যাগ করে গেল। কোনোদিন সকালে তাকে বনের ছায়ায়, কোনোদিন সন্ধ্যায় তাকে পাহাড়ের চুড়ার উপর দেখা যায়। এ দিকে রুচির শিক্ষায় অধ্যাপক সমস্ত মন দিলেন । কিন্তু, রুচির সমস্ত মন কোথায় । অধ্যাপক বিরক্ত হয়ে বললেন, "এখনও যদি সতর্ক না হও তবে দ্বিতীয়বার তোমাকে লজা পেতে হবে ।” দ্বিতীয়বার লজ্জা পাবার জন্তেই যেন সে তপস্তা করতে লাগল। অপর্ণার তপস্তা যেমন অনশনের, রুচির তপস্তা তেমনি অনধ্যায়ের। ষড়দর্শনের পুথি তার বন্ধই রইল, এমন-কি কাব্যের পুথিও দৈবাৎ খোলা হয়। অধ্যাপক রাগ করে বললেন, "কপিল-কণাদের নামে শপথ করে বলছি, আর কখনো হীলোক ছাত্র নেব না। বেদবেদান্তের পার পেয়েছি, খ্ৰীজাতির মন বুঝতে পারলেম না।” একদা মন্ত্রী এলে রাজাকে বললে, “ভবদত্তর বাড়ি থেকে কস্তার সম্বন্ধ এসেছে। ফুলে শীলে ধনে মানে তারা অদ্বিতীয়। মহারাজের সন্মতি চাই ।” রাজা জিজ্ঞাসা করলেন, "কস্তা কী বলে ।”