পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ষড়্‌বিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/১৬০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

S8br রবীন্দ্র-রচনাবলী মন্ত্রী বললে, “মেয়েদের মনের ইচ্ছা কি মুখের কথায় বোঝা যায়।” রাজা জিজ্ঞাসা করলেন, “তার চোখের জল আজ কী রকম সাক্ষ্য দিচ্ছে।” মন্ত্রী চুপ করে রইল। وقا রাজা তার বাগানে এসে বসলেন । মন্ত্রীকে বললেন, “তোমার মেয়েকে আমার কাছে পাঠিয়ে দাও।” রুচিরা এসে রাজাকে প্রণাম করে দাড়াল । রাজা বললেন, “বৎসে, সেই রামের বনবাসের খেলা মনে আছে ?” রুচিরা স্মিতমুখে মাথা নিচু করে দাড়িয়ে রইল । রাজা বললেন, “আজ সেই রামের বনবাস থেলা আর-একবার দেখতে আমার বড়ো সাধ ।” রুচিরা মুখের এক পাশে আঁচল টেনে চুপ করে রইল । রাজা বললেন, “বনও আছে, রামও আছে, কিন্তু শুনছি বংসে, এবার সীতার অভাব ঘটেছে। তুমি মনে করলেই সে অভাব পূরণ হয়।” রুচিরা কোনো কথা না ব’লে রাজার পায়ের কাছে নত হয়ে প্রণাম করলে । রাজা বললেন, “কিন্তু, বংসে, এবার আমি রাক্ষস সাজতে পারব না ।” রুচিরা স্নিগ্ধ চক্ষে রাজার মুখের দিকে চেয়ে রইল । রাজা বললেন, "এবার রাক্ষস সাজবে তোমাদের অধ্যাপক ৷” সিদ্ধি স্বর্গের অধিকারে মানুষ বাধা পাবে না, এই তার পণ । তাই, কঠিন সন্ধানে অমর হবার মন্ত্র সে শিখে নিয়েছে। এখন একলা বনের মধ্যে সেই মন্ত্র সে সাধনা করে । বনের ধারে ছিল এক কাঠকুড়নি মেয়ে। সে মাঝে মাঝে আঁচলে ক'রে তার জন্তে ফল নিয়ে আসে, আর পাতার পাত্রে আনে ঝরনার জল । ক্রমে তপস্তা এত কঠোর হল যে, ফল সে আর ছোয় না, পাখিতে এসে ঠুকরে খেয়ে যায় । আরও কিছু দিন গেল । তখন ঝরনার জল পাতার পাত্রেই শুকিয়ে शग्नि, মুখে ওঠে না ।