পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ষড়্‌বিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/১৬৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

লিপিকা 'd: কাঠকুড়নি হাত জোড় করে বললে, “দর্শনের পুণ্য হতে আমাকে কেন বঞ্চিত করবে ।” তপস্বী আবার আসনে বসল, অনেক ক্ষণ ভাবল, আর কিছু বলল না। G. তার অনুরোধ যেমনি রাগা হল অমনি মেয়েটির বুকের এক ধার থেকে আর-এক ধারে বারে বারে যেন বজ্রস্থচি বিধতে লাগল । সে ভাবলে, “আমি অতি সামান্ত, তবু আমার কথায় কেন বাধা ঘটবে।” সেই রাতে পাতার বিছানায় একলা জেগে ব’সে তার নিজেকে নিজের ভয় করতে লাগল । তার পরদিন সকালে সে ফল এনে দাড়াল, তাপস হাত পেতে নিলে । পাতার পাত্রে জল এনে দিতেই তাপস জল পান করলে । মুখে তার মন ভরে উঠল। কিন্তু তার পরেই নদীর ধারে শিরীষগাছের ছায়ায় তার চোখের জল আর থামতে চায় না । কী ভাবলে কী জানি । পরদিন সকালে কাঠকুড়নি তাপসকে প্রণাম করে বললে, “প্ৰভু, আশীৰ্বাদ চাই।” তপস্বী জিজ্ঞাসা করলে, "কেন ।” মেয়েটি বললে, “আমি বহুদূর দেশে যাব।” তপস্বী বললে, “যাও, তোমার সাধনা সিদ্ধ হোক ৷” وق\ একদিন তপস্তা পূর্ণ হল । ইন্দ্র এসে বললেন, “স্বর্গের অধিকার তুমি লাভ করেছ।” তপস্বী বললে, “তা হলে আর স্বর্গে প্রয়োজন নেই ।” ইন্দ্র জিজ্ঞাসা করলেন, "কী চাও।” তপস্বী বললে, “এই বনের কাঠফুড়নিকে ।”