পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ষড়্‌বিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/২০২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

>s)● রবীন্দ্র-রচনাবলী করে, তোমার বাড়ি কোথায় । ও বলে, কোননগরে, প্রশ্নচিহ্নের গলিতে । নাম বলি নে কেন । নাম বললে ইনি যে কেবলমাত্র ইনিতেই এসে ঠেকবেন, এই ভয় । জগতে আমি আছি একজন মাত্র, তুমিও তাই, সেই তুমি আমি ছাড়া আর সকলেই তো লে। আমার গল্পের সকল সে’র উনি জামিন । একটা কথা ব'লে রাখি, নইলে অধৰ্ম হবে । ওকে মাঝে রেখে যে পালা জমানো হয়েছে তার থেকে ধারা বিচার করে তারা ভুল করে ; যারা তাকে চাফুষ দেখেছে তারা জানে লোকটা স্বপুরুষ চেহারা মৃগম্ভীর। রাত্তিরে যেমন তারার আলোর ছড়াছড়ি, ওর গাম্ভীর্ষ তেমনি চাপা হাসিতে ভরা। ও পয়লা নম্বরের মহিষ, তাই কোনো ঠাট্টা মস্করায় ওকে জখম করতে পারে না । ওকে বোকার মতো সাজাতে আমার মজা লাগে, কেননা ও আমার চেয়ে বুদ্ধিমান । অবুঝের ভান করলেও ওর মানহানি হয় না ; স্ববিধে হয়, পুপুর স্বভাবের সঙ্গে ওর মিল হয়ে যায় । § এর মধ্যে পুপেদিদি গেছে দাজিলিঙে। সে রইল মাথাঘবা গলিতে একলা আমার জিন্মায় । তার ভালো লাগছে না । আমিও জালাতন হয়েছি। বলে, আমাকে দাৰ্জিলিং পাঠাও। আমি বললুম, কেন । সে বললে, পুরুষ মানুষ বেকার বসে আছি, আত্মীয়স্বজন ভারি নিন্দে করছে। কী কাজ করবে, বলো । পুপেদিদির খেলার রান্নার জন্যে খবরের কাগজ কুচিকুচি করে দেব । এত মেহন্নত সইবে না । একটু চুপ করো দেখি। আমি এখন ছ হাউ দ্বীপের ইতিহাস লিখছি। হু হাউ নামটা শোনাচ্ছে ভালো, দাদা। ওট। তোমার চেয়ে আমার কলমেই মানাত ঠিক। বিষয়টার একটু আমেজ দিতে পার কি। ঠাট্ট নয়, বিষয়টা গম্ভীর, কলেজে পাঠ্য হবার আশা রাখি । একদল বৈজ্ঞানিক ঐ শূন্ত দ্বীপে বসতি বেঁধেছেন। খুব কঠিন পরীক্ষায় প্রবৃত্ত । একটুখানি বুঝিয়ে বলো— কী করছেন তারা। হাল নিয়মে চাষবাস করছেন ? একেবারে উণ্টে, চাষের সম্পর্ক নেই।