পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ষড়্‌বিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/২১২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

& e o রবীন্দ্র-রচনাবলী বে-অদিব কোথাকার, কিসের শোধন আমার । তোমার ঐ বুড়োমির শোধন । বয়স তো কম হয় নি, তবু ছেলেমামুষিতে পাকা হতে পারলে না । প্রমাণ পেলে কিসে । এই-যে রিপোর্ট টা পড়ে শোনালে, ওটা তো আগাগোড়া ব্যঙ্গ, প্রবীণ বয়সের জ্যাঠামি। দেখলে না পুপুদিদির মুখ কিরকম গম্ভীর ? বোধ হয় গায়ে কাটা দিয়ে উঠেছিল। ভাবছিল, রোয়া-চাচা শেয়ালটা এখনি এল বুঝি তার কাছে নালিশ করতে। বুদ্ধির মাত্রাট একটু কমাতে যদি না পার তা হলে গল্প বলা ছেড়ে দাও। ওটা কমানো আমার পক্ষে শক্ত। তুমি বুঝবে কী ক’রে ; তোমাকে তো চেষ্টাই করতে হয় না, বিধাতা আছেন তোমার সহায় । দাদা, রাগ করছ বটে, কিন্তু আমি বলে দিলুম, বুদ্ধির কাজে তোমার রস যাচ্ছে শুকিয়ে । মজা করছ মনে কর, কিন্তু তোমার ঠাট্টা গায়ে ঠেকলে ঝামার মতো লাগে । এর আগে তোমাকে অনেকবার সতর্ক করে দিয়েছি— হাসতে গিয়ে, হাসাতে গিয়ে পরকাল খুইয়ো না । লেজকাটা শেয়ালের কথা শুনে পুপুদিদির চোখ জলে ভরে এসেছিল, দেখতে পাও নি বুঝি ? বল তো আজই তাকে আমি একটুখানি হাসিয়ে দিই গে– বিশুদ্ধ হাসি, তাতে বুদ্ধির ভেজাল নেই। লেখা তৈরি আছে নাকি ? আছে । নাটকি চালের আলাপ । বললেই হবে, আমাদের পাড়ার উধে গোবরা আর পঞ্চুতে মিলে কথা হচ্ছে। ওদের সবাইকে দিদি চেনে । আচ্ছা বেশ, দেখা যাক । গেছে। বাবা উধো । কী রে, সন্ধান পেলি ? গোবরা । আরে ভাই, তোমার কথা শুনে আজ মাসখানেক ধরে বনে-বাদাড়ে ঘুরে ঘুরে হাড় মাটি হল, টিকিও দেখতে পেলুম না । পঞ্চু । কার সন্ধান করছিল রে । গোবরা । গেছে। বাবার । পঞ্চু । গেছে। বাবা ? সে আবার কে রে । উধো। জানিল নে ? বিশ্বযুদ্ধ লোক তাকে জানে।