পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ষড়্‌বিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/২২৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২১২ রবীন্দ্র-রচনাবলী চ'লে গেছে। দিদি বাগান থেকে একঝুড়ি বাশের কোড়া, লাউডগা আর বেতোশাক তুলে রেখেছিল ; তাও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। দিদি ভারি রাগ করছে। আমি বললুম, তা আমি কী করব। পাল্লারাম বললে, তোমার এখানে কোথায় সে লুকিয়ে আছে, তাকে বের ক’রে तःि।। ७ ।। আমি বললুম, এখানে নেই, তুমি থানায় খবর দাও গে । নিশ্চয় আছে। আমি বললুম, ভালো মুশকিলে ফেললে দেখছি! বলছি সে নেই। “নিশ্চয় আছে, নিশ্চয় আছে, নিশ্চয় আছে’ বলতে বলতে পাল্লারাম আমার টেবিলের উপর দমদম তার বাশের লাঠির মুগুটী ঠুকতে লাগল। পাশের বাড়িতে একটা পাগল ছিল, সে শেয়াল ডাকের নকল ক’রে ইাক দিল ‘হুঙ্কাহুয়া’ । পাড়ার সব কুকুর চেচিয়ে উঠল । বনমালী আমার জন্তে এক মাস বেলের সরবত রেখে গিয়েছিল, সেটা উলটিয়ে বোতল ভেঙে বেগনি রঙের কালির সঙ্গে মিশে রেশমের চাদর বেয়ে আমার জুতোর মধ্যে গিয়ে জমল । চীংকার করতে লাগলুম, বনমালী, বনমালী ! বনমালী ঘরে ঢুকেই পাল্লারামের চেহারা দেখে বাপ রে’ ‘ম রে’ ব’লে চেঁচাতে চেঁচাতে দৌড় দিলে । হঠাৎ মনে পড়ে গেল ; বললেম, সে গেছে কনের খোজ করতে । কোথায় । মজাদিঘির ধারে বঁাশতলায় । লোকটা বললে, সেখানে যে আমারই বাড়ি । তা হলে ঠিক হয়েছে। তোমার মেয়ে আছে ? আছে । এইবার তোমার মেয়ের পাত্র জুটল। জুটলো এখনো বলা যায় না। এই ডাগু নিয়ে ঘাড়ে ধরে তার বিয়ে দেব, তার পরে বুঝব কন্যাদায় ঘুচল। তা হলে আর দেরি কোরো না। কনে দেখার পরেই বরকে দেখা হয়তো সহজ হবে না । o সে বললে, ঠিক কথা । একটা ভাঙা বালতি ছিল ঘরের বাইরে। সেটা ফল ক'রে তুলে নিলে। জিগেল করলেম, ওটা নিয়ে কী হবে।