পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ষড়্‌বিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/২৬৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

૨૯૨ রবীন্দ্র-রচনাবলী কলেজের ছেলের হো-হে ক’রে হাসতে থাকে । ও দাত খিচিয়ে তেড়ে তেড়ে যায়। একজন ফিরিঙ্গি ছেলে গাছতলায় পা ছড়িয়ে বসে কোলে রুমাল পেতে রুটি মাখন দিয়ে কলা দিয়ে আরামে খাচ্ছিল, ও হঠাৎ গিয়ে তার কলা ছিনিয়ে নিয়ে দিলে মুখে পুরে ; ছেলেট রেগে ওকে মারতে যায়, বন্ধুদের হাসি কিছুতে থামতে চায় না । মহা ভাবনা পড়ে গেল ওর জিন্মে নেবে কে । কেউ বললে পাঠাও জুতে, কেউ বললে অনাথ-আশ্রমে। জুর কর্তা বললে, এখানে মামুষ পোষা আমাদের বরাদে নেই। অনাথ-আশ্রমের অধ্যক্ষ বললে, এখানে বঁাদর পোষা আমাদের নিয়মে কুলোবে না । দাদামশায়, থামলে কেন । দিদিমণি, জগতের সব-কিছুর সব-শেষে আছে থামা । না, এ কিন্তু এখনও থামে নি । কল| ছিনিয়ে খাওয়া ও তে| যে-সে পারে । আচ্ছা, কাল হবে, আজ কাজ আছে । কাল কী হবে বলো-না, অল্প একটুখানি । জান তো ওর বিয়ের সম্বন্ধ আগেই হয়েছে ? ওর যে মগজ বদল হয়ে গেছে সে খবরটা কনের বাড়িতে পৌছয় নি । দিন স্থির, লগ্ন স্থির । বরের পিসে ওকে মস্ত দু ছড়া কলা খাইয়ে ঠাণ্ড করে বিয়ের জায়গায় নিয়ে গেছেন। তার পরে বিয়েবাড়িতে যে কাণ্ডট হল তা ভালো করে ফলিয়ে বললে তখন তুমিই বলবে, গল্পের মতো গল্প হয়েছে । এর পরে আর ওকে মেরে ফেলবার দরকার হবে না । সে মরার বাড় হবে । ` সন্ধেবেলার বসেছি ছাদে। দিব্যি দক্ষিণের হাওয়া দিচ্ছে। শুক্ল চতুর্থীর চাদ উঠেছে আকাশে । পুপুদিদি একটি আকদের মালা গেঁথে এনেছে কাচপাত্রে, গল্প বলা শেষ হলে বক্শিষ মিলবে । হেনকালে হাপাতে ইপিাতে সে উপস্থিত। বললে, আজ থেকে আমার গল্পজোগানের কাজে আমি ইস্তফা দিলুম। আমাকে পাতু গেঞ্জেলের গা পরিয়েছিলে, সেও সহ করেছি। শেষকালে বাদরের মগজ পুরেছ আমার খুলির মধ্যে, এ সইবে না। এর পরে হয়তো আমাকে চাম্‌চিকে কি টিকটিকি কি গুবরে পোকা বানিয়ে দেবে। তোমাদের অসাধ্য কিছুই নেই। আজ আপিলে গিয়ে কেদার টেনে বলেছি। দেখি