পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ষড়্‌বিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/২৯৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সে ミbr○ মাস্টার জিগেস করলে, আঁঠি-বাধা ওটা কী এনেছিস । কানাই বললে, সজনের ডাটা । মাস্টার সগর্বে আমার দিকে চেয়ে বললে, এই দেখে মজা । ও বাজারে যাবার সময় আমার মনে ছিল লাউডগা ও বাজার থেকে ফিরে এল, আমি পেয়ে গেলুম সজনের ডাটা । হুকুম না করবার এই সুবিধে । আমি বললুম, সজনের ডাটা না এনে ও যদি আনত চিচিঙ্গে ? মাস্টার জবাব দিলেন, তা হলে ক্ষণকালের জন্যে ভাবনা করতে হত । নাম জিনিসটার প্রভাব আছে। চিচিঙ্গে শব্দটা লোভজনক নয় । কিন্তু, কানাই যদি ওট; বিশেষ ক'রে বাছাই করে আনত, তা হলে সংস্কার কাটাবার একটা উপলক্ষ হত । জীবনে সব প্রথমে ভেবে দেপবার সুযোগ হত ‘দেখাই যাক-না ; হয়তো আবিষ্কার করতুম, ওটা মন্দ চলে না। চিচিঙ্গে পদার্থটার বিরুদ্ধে অন্ধ বিরাগ দূর হয়ে উপভোগ্যের সীমানা বেড়ে যেত। এমনি করেই কাব্যে কবির তো নিজের রচিতে আমাদের রুচির প্রসার বাড়িয়ে দিচ্ছে । স্বষ্টিকে অ' গুরলাইন করাই তনের কাজ । তোমার রুচির প্রসার বাড়াবার কাজে কানাইয়ের আরও এমন হাত আছে ? আছে বই-কি । ও না থাকলে পিড়িং শাকে আমি কোনোদিন মনোযোগই দিতুম না । শব্দটা আমাকে মারত ধাক্কা । সংসারে সংস্কারমুক্তিই তে অধিকারপ্যাপ্তি । সেই মহং কাজে আছে তোমার কানাই । তা মানতে হবে, ভাই । ওর ইচ্ছার যোগে আমার ইচ্ছার সংকীর্ণত ঘুচে যায় প্রতিদিন । আমি একল থাকলে এমনটা ঘটত না । বুঝলুম, কিন্তু কানাইয়ের ইচ্ছার সীমানাটা— বাড়িয়েছি বই-কি । পূর্ববঙ্গের লোক, কলাইয়ের ভুলের নাম শুনতে পারত না । আজকাল ছিঙ দিয়ে কলাইয়ের ডাল ও থাচ্ছে বেশ । এমন সময়ে কানাইয়ের পুনঃপ্রবেশ । বললে, একটা কথা বলতে ভুলে গেছি, আজি দইট আনি নি। কবরেজমশায় বলেন, রাত্রে দইট বারণ । দইয়ের দাম চড়ে গেছে বললে দ্বিরুক্তি হয়, এইজন্তে কবরেজমশায়কে পাড়তে হল । সাস্তুনা দেবার জন্তে বললে, অল্প একটু আদার রস মিশিয়ে পাংলা চা বানিয়ে দেব, শীতের রাত্রে উপকার দেবে। আমি জিগেস করলেম, কী বল হে মাস্টার, আদা দিয়ে চা সবাইকে খাওয়াবে না কি ।