পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ষড়্‌বিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৩০৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সে ર૧ Ꮌ8 পরদিন সকালবেলায় প্রাতরাশে আমার নির্দেশমত পুপেদিদি নিয়ে এল পাথরের পাত্রে ছোলাভিজে এবং গুড় । বর্তমান যুগে পুরাকালীন গৌড়ীয় খাদ্যবিধির রেনেসাসপ্রবর্তনে লেগেছি। দিদিমণি জিগেল করলে, চা হবে কি । আমি বললুম, না, খেজুর-রস । দিদি বললে, আজ তোমার মুখখানা অমন দেখছি কেন । কোনো খারাপ স্বপ্ন দেখেছি না কি । আমি বললুম, স্বপ্নের ছায়া তো মনের উপর দিয়ে যাওয়া-আসা করছেই– স্বপ্নও মিলিয়ে যায়, ছায়ারও চিহ্ন থাকে না । আজ তোমার ছেলেমামুষির একটা কথা বারবার মনে পড়ছে, ইচ্ছে করছে বলি । বলে;-না ! সেদিন লেখা বন্ধ ক'রে বারান্দায় বলে ছিলুম। তুমি ছিলে, স্বকুমারও ছিল । সদ্ধে হয়ে এল, রাস্তার বাতি জালিয়ে গেল, আমি বলে বসে সত্যযুগের কথা বানিয়ে বানিয়ে বলছিলুম। বানিয়ে বলছিলে! তার মানে ওটাকে অসত্যযুগ ক’রে তুলছিলে । ওকে অসত্য বলে না। যে রশ্মি বেগনির সীমা পেরিয়ে গেছে তাকে দেখা যায় না ব'লেই সে মিথ্যে নয়, সেও আলো । ইতিহাসের সেই বেগনি-পেরোনো আলোতেই মানুষের সত্যযুগের স্বষ্টি । তাকে প্রাগৈতিহাসিক বলব না, লে আলট্রাঐতিহাসিক । আর তোমার ব্যাখ্যা করতে হবে না। কী বলছিলে বলে । আমি তোমাদের বলছিলুম, সত্যযুগে মানুষ বই পড়ে শিখত না, খবর শুনে জানত না, তাদের জানা ছিল হুয়ে-উঠে জানা । কী মানে হল বুঝতে পারছি নে । একটু মন দিয়ে শোনো বলি। বোধ হয় তোমার বিশ্বাস তুমি আমাকে জান ? দৃঢ় বিশ্বাস । জান, কিন্তু সে জানায় সাড়ে-পনেরো অানাই বাদ পড়ে গেছে । ইচ্ছে করলেই তুমি যদি ভিতরে ভিতরে আমি হয়ে যেতে পারতে তা হলেই তোমার জানাটা সম্পূর্ণ সত্য হ’ত । তা হলে তুমি বলতে চাও আমরা কিছুই জানি নে ? ૨૭1> છે