পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ষড়্‌বিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৩৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

२९ রবীন্দ্র-রচনাবলী খয়রাডাঙার ময়রা আসে, কিনে আনে ময়দা— পচা ঘিয়ের গন্ধ ছড়ায়, যমালয়ের পয়দা । আকাশ থেকে নামল বোমা, রেডিয়ো তাই জানায়, অপঘাতে বম্বন্ধর ভরল কানায় কানায় । খাচার মধ্যে শুামা থাকে, ছিরকুটে খায় পোকা, শিস দেয় সে মধুর স্বরে, হাততালি দেয় খোকা । হুইস্ল বাজে ইস্টিসনে, বরের জ্যাঠামশাই চমকে ওঠে— গেলেন কোথায় অগ্রদ্বীপের গোসাই । সাংরাগাছির নাচনমণি কাটতে গেল সাতার, হায় রে কোথায় ভাসিয়ে দিল সোনার সিথি মাথার । মোযের শিঙে ব’সে ফিঙে লেজ দুলিয়ে নাচে— শুধোয় নাচন, সিথি আমার নিয়েছে কোন মাছে । মাছের লেজের ঝাপটা লাগে, শালুক ওঠে দুলে ; রোদ পড়েছে নাচনমণির ভিজে চিকন চুলে । কোথায় ঘাটের ফাটল থেকে ডাকল কোলাব্যাঙ, খড়গপুরের ঢাকে ঢোলে বাজল ড্যাভ্যাংড্যাঙ ! কঁপিছে ছায় আঁকাবঁকা, কলমিপাড়ের পুকুর — জল খেতে যায় এক-পা-কাটা তিনপেয়ে এক কুকুর । হুইসল বাজে, আছে সেজে পাইকপাড়ার পাত্ৰী, শেয়ালকাটার বন পেরিয়ে চলে বিয়ের যাত্ৰী । গ্যাগে করে রেডিয়োট, কে জানে কার জিত— মেশিনগানে গুড়িয়ে দিল সভ্যবিধির ভিত । টিয়ের মুখের বুলি শুনে হাসছে ঘরে পরে— রাপে কৃষ্ণ, রাধে কৃষ্ণ, কৃষ্ণ কৃষ্ণ হরে । দিন চলে যায় গুনগুনিয়ে ঘুমপাড়ানির ছড়া, শানবাধানে ঘাটের ধারে নামছে কঁাখের ঘড়া । আতাগাছের তোতাপাখি, ডালিমগাছে মেী, হীরেদাদার মড় মড়ে থান, ঠাকুরদাদার বউ ।