পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ষড়্‌বিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৩৪২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩২৪ রবীন্দ্র-রচনাবলী রাজা বললেন, তুমি অল্প নিয়ে চলে, আর আমাকে দেখিয়ে দাও সেই-সব ফলমূল যা তুমি নিজে জড়ো করে খাও । কন্যা বললে, আমার যে অপরাধ হবে । রাজা বললেন, তুমি দেবতার আশীৰ্বাদ পাবে। তোমার কোনো ভয় নেই। আমাকে পথ দেখিয়ে নিয়ে চলো । বাপের জন্ত তৈরি অল্পের থালি সে মাথায় নিয়ে চলল। ফলমূল সংগ্ৰহ ক’রে দুজনে তাই খেয়ে নিলে। রাজা গিয়ে দেখলেন, বুড়ে বাপ কুঁড়েঘরের দরোজায় ব’সে । সে বললে, মা, আজ দেরি হল কেন । কন্যা বললে, বাবা, অতিথি এনেছি তোমার ঘরে । বৃদ্ধ ব্যস্ত হয়ে বললে, আমার গরিবের ঘর, কী দিয়ে আমি অতিথিসেবা করব । রাজা বললেন, আমি তো আর কিছুই চাই নে, পেয়েছি তোমার কন্যার হাতের সেবা । আজ আমি বিদায় নিলেম । আর-একদিন অলিব । সাত দিন সাত রাত্রি চলে গেল, এবার রাজা এলেন রাজবেশে । তার অশ্ব রথ সমস্ত রইল বনের বাইরে । বুদ্ধের পায়ের কাছে মাথা রেপে প্রণাম করলেন ; বললেন, আমি বিজয়পত্তনের রাজা । রানী খুজতে বেরিয়েছিলাম দেশে বিদেশে । এতদিন পরে পেয়েছি— যদি তুমি আমায় দান কর, আর যদি কন্যা থাকেন রাজি । বৃদ্ধের চোখ জলে ভরে গেল । এল রাজহস্তী— কাঠকুড়ানি মেয়েকে পাশে নিয়ে রাজা ফিরে গেলেন রাজধানীতে । অঙ্গ বঙ্গ কলিঙ্গের রাজকন্যারা শুনে বললে, ছি ! 事 事 事 আলিল দিয়াড়ি হাতে রাজার ঝিয়ারি খিড়কির আঙিনায়, নামটি পিয়ারি । আমি শুধালেম তারে, এসেছ কী লাগি । সে কহিল চুপে চুপে, কিছু নাছি মাগি । আমি চাই ভালো ক’রে চিনে রাখো মোরে, আমার এ আলোটিতে মন লহো ভ’রে।