পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ষড়্‌বিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৩৬৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

○8b" রবীন্দ্র-রচনাবলী পান্নালালের গল্পটা শুনে বাচস্পতি মুচকে হেসে বললেন, ভোরভোল 專 毒 皋 মাটি থেকে গড়া হয়, পুন হয় মাটি, আবার গড়িতে তারে দিনরাত খাটি । একই মসলায় তারে ভাঙে আর গড়ে, পুরোনোটা বারে বারে নৃতনেতে চড়ে । গেছে যাহা তাও আছে, এই বিশ্বাসে ফাকা যেথা সেথ মন ফিরে ফিরে আসে । চন্দনী জানোই তো সেদিন কী কাও । একেবারে তলিয়ে গিয়েছিলেম আর-কি, কিন্তু তলায় কোথায় যে ফুটো হয়েছে তার কোনো খবর পাওয়া যায় নি । না মাথা ধরা, না মাথা ঘোরা, না গায়ে কোথাও ব্যথা, ন পেটের মধ্যে একটুও খোচাখুঁচির তাগিদ । যমরাজার চরগুলি খবর আসার সব দরজাগুলো বন্ধ করে ফিস্ ফিস্ ক’রে মন্ত্রণা করছিল। এমন স্ববিধে আর হয় না! ডাক্তারেরা কলকাতায় নব্বই মাইল দূরে। সেদিনকার এই অবস্থা । সন্ধে হয়ে এসেছে। বারান্দায় বসে আছি । ঘন মেঘ ক’রে এল। বৃষ্টি হবে বুঝি। আমার সভাসদর বললে, ঠাকুরদা, একসময় শুনেছি তুমি মুখে মুখে গল্প ব’লে শোনাতে, এখন শোনাও না কেন । আর-একটু হলেই বলতে যাচ্ছিলুম, ক্ষমতায় ভাটা পড়েছে ব’লে । এমনসময় একটি বুদ্ধিমতী বলে উঠলেন, আজকাল আর বুঝি তুমি পার না ? এটা সহ করা শক্ত। এ যেন হাতির মাথায় অঙ্কশ। আমি বুঝলুম, আজ আমার আর নিস্তার নেই। বললুম, পারি নে তা নয়— পারি। তবে কিনা— বাকিটা আর বলা হল না। মনে মনে তখন রাজপুতনা থেকে গল্প তলপ করতে আরম্ভ করেছি। খানিকটা কাশলুম। একবার বললুম, রোলো, একবার একটুখানি দেখে আসি, কে যেন এল ।