পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ষড়্‌বিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৩৯১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বাংলাভাষা-পরিচয় জীবের মধ্যে সবচেয়ে সম্পূর্ণতা মানুষের । কিন্তু সবচেয়ে অসম্পূর্ণ হয়ে সে জন্মগ্রহণ করে। বাঘ ভালুক তার জীবনযাত্রার পনেরো আন মূলধন নিয়ে আসে প্রকৃতির মালখানা থেকে । জীবরঙ্গভূমিতে মানুষ এসে দেখা দেয় দুই শূন্ত হাতে মুঠো বেঁধে । মানুষ আসবার পূর্বেই জীবশ্বষ্টিযজ্ঞে প্রকৃতির ভূরিব্যয়ের পালা শেষ হয়ে এসেছে। বিপুল মাংস, কঠিন বর্ম, প্রকাও লেজ নিয়ে জলে স্থলে পৃথুল দেহের যে অমিতাচার প্রবল হয়ে উঠেছিল তাতে ধরিত্রীকে দিলে ক্লাস্ত করে । প্রমাণ হল আতিশষ্যের পরাভব অনিবার্য । পরীক্ষায় এটাও স্থির হয়ে গেল যে, প্রশ্রয়ের পরিমাণ যত বেশি হয় দুর্বলতার বোঝাও তত দুৰ্বহ হয়ে ওঠে । সূতন পর্বে প্রকৃতি যথাসম্ভব মামুষের বরাদ কম করে দিয়ে নিজে রক্টল নেপথ্যে । মানুষকে দেথতে ছল খুব ছোটে, কিন্তু সেট একটা কৌশল মাত্র । এবারকার জীবযাত্রার পালায় বিপুলতাকে করা হল বহুলতায় পরিণত । মহাকায় জন্তু ছিল প্রকাগু একলা, মানুষ হল দূরপ্রসারিত অনেক । BBBB KBB BBB BB BS BBB BBB BB S BBBB BBB BB BBBB BB যুক্ত, বহু মাহষের হাতে তৈরি । কখনো কখনো শোনা গেছে, বনের জন্তু মাছুধের শিশুকে চুরি করে নিয়ে গিয়ে পালন করেছে। কিছুকাল পরে লোকালয়ে যখন তাকে ফিরে পাওয়া গেছে তখন দেখা গেল জস্তুর মতোই তার ব্যবহার । অথচ সিংহের বাচ্ছাকে জন্মকাল থেকে মানুষের কাছে রেখে পুষলে সে নরসিংহ হয় না । এর মানে, মাস্থ্য থেকে বিচ্ছিন্ন হলে মানবসস্তান মানুষষ্ট হয় না, অথচ তখন তার জন্তু হতে বাধা নেই। এর কারণ বহু যুগের বহু কোটি লোকের দেহ মন মিলিয়ে মানুষের সত্তা । সেই বৃহৎ সত্তার সঙ্গে যে পরিমাণে সামঞ্জস্ত ঘটে ব্যক্তিগত মানুষ সেই পরিমাণে যথার্থ মানুষ হয়ে ওঠে । সেই সত্তাকে নাম দেওয়া যেতে পারে মহামান্থয । এই বৃহৎ সত্তার মধ্যে একটা অপেক্ষাকৃত ছোটো বিভাগ আছে। তাকে বলা যেতে পারে জাতিক সত্তা। ধারাবাহিক বহু কোটি লোক পুরুষপরম্পরায় মিলে এক-একটা সীমানায় বাধা পড়ে ।