পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ষড়্‌বিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৪৫৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

88° ब्रवैौटश-द्रक्रमांवलौ পৃথিবী পুরাবে তুমি ভরতের ধনে। সর্বনামে এই বিভক্তি বিকল্পে য়, যেমন : তোমায় দিয়ে। নিয়ের দৃষ্টাস্তে কর্মকারকের চিহ্ন দেখি নে, যথা : মন দিয়ে শোনো, হাত দিয়ে খাও, লোক দিয়ে চিঠি পাঠাও । মন দিয়ে কাজ করো, বাজে কাজে হাত দিয়ে না : এখানে মনও নির্বস্তুক, হাতও তাই ; এ হাত দৈহিক হাত নয়, এ হাত বলতে বোঝায় চেষ্টা । লোক দিয়ে চিঠি পাঠাও : এ লোক কোনো বিশেষ লোক নয়, সাধারণভাবে যাকে হোক কাউকে দিয়ে চিঠি পাঠাবার কথা হচ্ছে। ঘরামি দিয়ে চাল ছাইতে হবে : এখানে বিকল্পে ‘ঘরামিকে দিয়ে'ও হয় । কিন্তু ব্যক্তিবাচক বিশেষ্যে কর্মকারকের কে বিভক্তি থাকাই চাই : রামকে দিয়ে সই করিয়ে নিয়ো । মানুষ ছাড়া অন্ত জীববাচক বিশেষ সম্বন্ধেও এই নিয়ম, যেমন : বাদরকে দিয়ে চাষ করানো চলে না, ধোবার গাধাকে দিয়ে ঘোড়দৌড় খেলাবে না কি । করণকারকে ‘ক’রে’ শব্দ অধিকরণক্ষপের সঙ্গে যুক্ত হয় ; মাসে ক’রে জল খাও, তুলিতে ক’রে আঁকো । করণকারকে ‘দিয়ে’ আর ‘ক’রে’ শব্দে পার্থক্য আছে। ‘পাঙ্কিতে ক’রে যাওয়া চলে, ‘পান্ধি দিয়ে চলে না। খাবার বেলায় বলি হাতে ক’রে খাও’ ; নেবার বেলায় বলি ‘হাত দিয়ে নাও । একটাতে হাত হচ্ছে উপায়, আর-একটাতে হাত হচ্ছে আধার। পাঙ্কিতে ‘ক’রে মানুষ যায়, কিন্তু যায় পথ দিয়ে’ । এখানে পাঙ্কি উপায়, পথ আধার। কিন্তু অর্থহিসাবে বিকল্পে হাত উপায়ও হতে পারে, আধারও হতে পারে। তাই "হাত দিয়ে খাও’ বলাও চলে, “হাতে ক’রে খাও’ বলতেও দোষ নেই। ব’লে থাকি : বড়ো রাস্তা দিয়ে যখন যাবে গাড়িতে ক’রে যেয়ো । কোনো সাহেব যদি বলে ‘রাস্তায় ক’রে যাবার সময় গাড়ি দিয়ে যেয়ো’, বুঝব লে বাঙালি নয়। লোক দিয়ে পাঠাব চিঠি, লোকটা উপায় ; ব্যাগে ‘ক’রে সে চিঠি নেবে, ব্যাগটা আধার।

›ማ ‘হতে আর থেকে এই দুটো শব্দ বাংলা অপাদানের সম্বল। প্রাচীন হিন্দিতে ‘হতে শব্দের জুড়ি পাওয়া যায় ‘হুস্তো', নেপালিতে ‘ভন্দা', সংস্কৃত ভবন্ত’। প্রাচীন রামায়ণে দেখেছি : ঘরে হনে, ভূমি হনে। অপভ্রংশ প্রাকৃতের অপাদানে পাওয়া যায় : হোংতও হোংতউ ‘থেকে’ শব্দটার ধ্বনিসাদৃপ্ত পাওয়া যায় নেপালিতে, যেমন : “তাহা দেখি- সেখান থেকে, মাঝ দেখিমাঝ থেকে। গুজরাটিতে অাছে 'থকি’ । বাংলায় অপাদানে একটা গ্রাম্য প্রয়োগ