পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ষড়্‌বিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৪৭২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

848 ब्ररौठ-ब्रळ्नावलौ পাচটি বাক্যে গেলেন’ ক্রিয়াপদের উপর এবং শেষের বাক্যটিতে কোথায়’ শব্দের উপর ক্টোক দিয়ে এই সবকটা প্রয়োগই চলে। আশ্চর্ষ তোমার সাহস, কিংবা, রেখে দাও তোমার চালাকি, একেবারে ভাসিয়ে দিলে কেঁদে : সাধু ভাষার ছাদের চেয়ে এতে আরও বেশি জোর পৌছয়। যা থাকে অদৃষ্ট্রে, যা করেন ভগবান, সে পড়ে আছে পিছনে : এ আমরা কেবল-ষে বলি তা নয়, এইটেই বলি সহজে । $ বাংলা ভাষার একটা বিপদ তার ক্রিয়াপদ নিয়ে ; 'ইল’ ‘তেছে’ ‘ছিল’ -যোগে বিশেষ বিশেষ কালবাচক ক্রিয়ার সমাপ্তি। ক্রিয়াপদের এই একঘেয়ে পুনরাবৃত্তি এড়াবার জন্তে লেখকদের সতর্ক থাকতে হয়। বাংলা বাক্যবিস্তাসে যদি স্বাধীনতা না থাকত তা হলে উপায় থাকত না । এই স্বাধীনতা আছে বটে, কিন্তু তাই বলে স্বৈরাচার নেই । ‘ভাসিয়ে একেবারে দিলে কেঁদে’ কিংবা ‘ভাসিয়ে দিলে একেবারে কেঁদে’ বলি নে ৷ ‘সে পড়ে সবার আছে পিছনে কিংবা ‘রেখে চালাকি দাও তোমার’ হবার জো নেই। তার কারণ জোড়া ক্রিয়ার জোড় ভাঙা অবৈধ । চলতি গদ্যের একটা নমুনা দেওয়া যাক। এতে সাধু গদ্যভাষার বাক্যপদ্ধতি অনেকটা ভেঙে দেওয়া হয়েছে— ம்ே কুঞ্জবাবু চললেন মথুরায় । তার ভাই মুকুন্দ যাবে স্টেশন পর্যন্ত । বৈজু দারোয়ান চলেছে মাঠাকরুনের পন্ধির পাশে পাশে, লম্বা বাশের লাঠি হাতে, ছিটের মেরুজাই গায়ে, গলায় রুদ্রাক্ষের মালা। ঘর সামলাবার জন্তে রয়ে গেছে ভরু সর্দার । টেমি কুকুরটা ঘুমোচ্ছিল সিমেন্টের বস্তার উপর ল্যাজে মাথা গুজে, গোলমাল শুনে ছুটে এল এক লাফে । যত ওরা বারণ করে ততই কেই-র্কেই ঘেউ-ঘেউ রবে মিনতি জানায়, ঘন ঘন নাড়ে বোচা ল্যাজটা । রেল লাইন থেকে শোনা যাচ্ছে মালগাড়ি আসার শব্দ। ডাকগাড়ি আসতে বাকি আছে বিশ মিনিট মাত্র। বিষম ব্যস্ত হয়ে পড়ল মুকুন্দ ; সে যাবে কলকাতার দিকে, আজ সেপানে মোহনবাগানের ম্যাচ। ঐ বুঝি দেখা গেল সিগ্ন্যাল-ডাউন। এ দিকে নামল কমাঝম্ বৃষ্টি, তার সঙ্গে জোর হাওয়া । বেহারাগুলো পাৰি নামালো অশথতলায় । হঠাৎ একটি ভিখিরি মেয়ে ছুটে এসে বললে, দরজা খোলো মা, একবার মুখখানি দেখে নিই। দরজা খুলে চমকে উঠলেন গিমিঠাকরুন, ‘ওমা, ও কে গো ! আমাদের বিনোদিনী যে ! কে করলে ওর এ দশা!’ কুকুরট ওকে দেখেই লাফিয়ে উঠল, ওর বুকে দুই পা তুলে কাই-কাই করতে লাগল আনন্দে। বিনোদিনী একবার তার গলা জড়িয়ে ধরল দুই হাতে, তার পরেই ওকে সরিয়ে ছিল, জোরে