পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ষড়্‌বিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৪৮৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

*थब्र नॐ{ 80% এই দুই পৃষ্ঠাতেই আমরা দেখিয়াছি, এই দুটি ভক্ত এমন স্থানে এমন অবস্থার মধ্যে আত্মদান করিয়াছেন যেখানে তাহাজের জীবনের কোনো পূর্বাভ্যন্ত সহজ পথ র্তাহাদের সম্মুখে ছিল না ; যেখানে তাহদের হৃদয়মনের আজন্মকালের সংস্কার পদে পদে কঠোর বাধা পাইয়াছে ; যেখানে কেবল যে তাহারা আত্মোৎসর্গ করিয়াছেন তাহ নছে, পদে পদে আত্মোৎসর্গের পথ তাহাদের নিজেকে খনন করিয়া চলিতে হইয়াছে— কেননা, তাহাদের প্রবেশ চারি দিকেই অবরুদ্ধ। সত্যকে ভক্তি করিবার এই ক্ষমতা, এবং সত্যের জন্ত ছুৰ্গম বাধা লঙ্ঘন করিয়া দিনের পর দিন আপনাকে অকুষ্ঠিতভাবে নিঃশেষে দান করিবার এই শক্তি, এ যে র্তাহাদের জাতীয় সাধনা হইতেই তাহারা পাইয়াছিলেন । এই আশ্চর্য শক্তি কি বস্তুউপাসনার সাধনা হইতে কেহ কোনোদিন লাভ করিতে পারে। ইহা কি যথার্থই আধ্যাত্মিক নহে। এবং জিজ্ঞাসা করি, এই শক্তি কি আমাদের দেশে যথেষ্ট পরিমাণে দেখিতে পাই । কিন্তু, তাই বলিয়া আমাদের দেশে কি আধ্যাত্মিকতা নাই। আমি তাহ বলি না । এখানেও আধ্যাক্সিকতার একটা দিক প্রকাশ পাইয়াছে । আমাদের দেশের যাহারা সাধক তাহারা কেহ বা জ্ঞানে, কেহ বা ভক্তিতে অখণ্ডস্বরূপকে সমস্ত খণ্ডপদার্থের মধ্যে সহজেই স্বীকার করিতে পারেন । এইখানে জ্ঞানের দিকে এবং ভাবের দিকে, অনেক কালের চিন্তায় এবং সাধনায়, তাহাজের বাধা অনেক পরিমাণে ক্ষয় হইয়া আসিয়াছে। এইজন্য আমাদের দেশের র্যাহারা সাধুপুরুষ র্তাহারা চিংলোকে ৰা হৃদয়ধামে অনন্তের সঙ্গে সহজে যোগ উপলব্ধি করিতে পারেন । আমাদের দেশের মানবপ্রকৃতিতে এই শক্তিটি দেখিবার জন্ত ঘদি কোনো বিদেশী শ্রদ্ধা ও দৃষ্টিশক্তি লইয়া আসেন তবে নিশ্চয়ই তিনি কৃতাৰ্থ হইবেন, এবং সম্ভবত তিনি আপনার প্রকৃতির ভিতরকার একটা অভাব পূরণ করিয়া লইয়া বাইতে পারিবেন। আমার বলিবার কথা এই যে, আমাদের মধ্যেও তেমনি পূরণ করিবার মতো একটা অভাব আছে, এবং সেই অভাবই আমাদিগকে দুর্বলতার অবসাদের মধ্যে বহুদিন হইতে আকর্ষণ করিতেছে। এ কথা শুনিলেই আমাদের শোভিমানীরা বলিয়া উঠেন, ই, অভাব আছে বটে, কিন্তু তাছা আধ্যাত্মিকতার নছে, তাহা বস্তঙ্গানের, তাহা বিষয়ৰুদ্ধির— যুরোপ তাহারই জোরে পৃথিবীর অন্ত-সকলকে ছাড়াইয়া উঠিয়াছে। আমি পূর্বেই বলিয়াছি, তাছা কোনোমতেই হইতে পারে না। কেবল বস্তসঞ্চয়ের উপরে কোনো জাতিরই উন্নতি ধাড়াইতে পারে না এবং কেবল বিষয়বুদ্ধির জোরে